তাহাউর রানা। — ফাইল চিত্র।
মুম্বইয়ে ২০০৮ সালের নভেম্বরে সেই হামলার আগে দুবাইয়ে তাহাউর রানার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন এক ব্যক্তি। সূত্রের খবর, এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা)-র অফিসারেরা মনে করছেন, মুম্বই হামলার খবর দুবাই নিবাসী ওই ব্যক্তির কাছে ছিল। এ বার তাঁরই খোঁজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।
মুম্বই হামলার মূল চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলির অন্যতম সহযোগী ছিলেন কানাডার ব্যাবসায়ী রানা। তিনি আদতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। ৬৪ বছরের সেই রানা এখন এনআইএ-র হেফাজতে। তাঁকে জেরা করছেন তদন্তকারীরা। আর সেই সূত্রেই প্রকাশ্যে আসছে প্রায় ১৭ বছর আগে হওয়া মুম্বই হামলার বিষয়ে একের পর এক তথ্য। এ বার তদন্তকারীরা মুম্বই হামলার একটি ‘দুবাই যোগ’-ও খুঁজে পেয়েছেন।
এনআইএ-রই একটি সূত্রের খবর, মুম্বই হামলার আগে দুবাইয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন রানা। এই তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়েছে আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থাগুলি। সেই তথ্য অনুযায়ী, মুম্বইয়ে যে হামলা হতে চলেছে, সেই বিষয়ে জানতেন দুবাইয়ের ওই ব্যক্তি। সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা করছে এনআইএ। হামলায় তাঁর কী ভূমিকা ছিল বা আদৌ কোনও ভূমিকা ছিল কি না, তা-ও খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২০০৮ সালে রানাকে ভারতে যেতে বারণ করেছিলেন হেডলি ওরফে দাউদ গিলানি। ভারতে শীঘ্রই বিস্ফোরণ হতে পারে বলে ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। অভিযোগ, হেডলিই রানার সঙ্গে এক ষড়যন্ত্রীর দিল্লিতে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সূত্র বলছে, তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন, সেই তৃতীয় ব্যক্তি কি পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত? তিনি পাকিস্তানের সেনা বা কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য কি না, তা-ও খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের একাংশ মনে করছেন, আমেরিকার গোয়েন্দারা এর আগে যখন রানাকে জেরা করেছিলেন, তখন তিনি হয়তো সেই ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেছেন। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট এখন এনআইএর হাতেই রয়েছে।
এনআইএ তদন্তে নেমে জেনেছিল, ২০০৫ সালের অগস্টে রানাকে ভারতে যাওয়ার কথা বলেছিলেন হেডলি। এই নিয়ে লশকর-এ-ত্যায়বার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। রানার উপর মুম্বইয়ে রেইকি করার দায়িত্ব বর্তেছিল। রানার অভিবাসনের ব্যবসা ছিল। সে কারণে তাঁর উপর মুম্বইয়ে কারও সন্দেহ হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন হেডলি। রানার সঙ্গে তিনিও গিয়েছিলেন। হেডলির কাছে আমেরিকার পাসপোর্ট ছিল। ফলে ভারতের ভিসা পেতে কোনও সমস্যা হয়নি।
পরে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ের একাধিক জায়গায় হয়েছিল হামলা। প্রাণ গিয়েছিল ১৬৬ জনের। আহত হয়েছিলেন ২০০ জনেরও বেশি।