ছহি: সংগৃহীত।
আগরায় বেড়াতে এসে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন সুইস এক যুবক ও তাঁর বান্ধবী। লাঠি-পাথর দিয়ে নৃশংস হামলার জেরে মাথা ফেটেছে ওই যুবকের। কানে চোট লেগেছে, ফলে শুনতেও সমস্যা হচ্ছে। হাত ভেঙেছে তাঁর বান্ধবীর। এই ঘটনা বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
আক্রমণের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দু’জনকে ফেলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় জড়িত এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
পুলিশ জানিয়েছে, সুইৎজারল্যান্ডের লুসানের বাসিন্দা বছর চব্বিশের কোয়েন্টিন জেরেমি ক্লার্ক এবং তাঁর বান্ধবী মারি ড্রক্সজ গত ৩০ সেপ্টেম্বর আগরায় বেড়াতে এসেছিলেন। গত শনিবার তাজমহল দেখতে গিয়েছিলেন তাঁরা দু’জনে। পরের দিন আগরার কাছে ফতেপুর সিক্রিতে ঘুরতে যান ওই জুটি।
আরও পড়ুন
সালাউদ্দিনের ছেলের বাড়িতে এনআইএ তল্লাশি
এটিএমের পিন জেনে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সাফ
পুলিশের কাছে অভিযোগে তাঁরা জানিয়েছেন, ফতেপুর সিক্রির কাছে ঘোরার সময়ই তাঁদের পিছু নেয় চার জন যুবক। প্রায় গায়ে পড়েই আলাপ জমানোর চেষ্টা করতে থাকে তারা। কোয়েন্টিনরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের নিরস্ত করা যায়নি। উল্টে তাঁদের পথ আটকে দাঁড়ায় ওই চার জন। এর পর মোবাইল ক্যামেরা বার করে কোয়েন্টিন ও মারির সঙ্গে বার বার সেল্ফি তুলতে থাকে। কোয়েন্টিন বলেন, “প্রায় এক ঘণ্টা ধরে আমাদের পিছনে পিছনে আসছিল ওরা। বারণ করা সত্ত্বেও আমাদের ছবি তুলতে থাকে।” এমনকী, তাঁদের উদ্দেশে কটূক্তিও করতে থাকে তারা।
প্রতিবাদ জানালে আচমকাই কোয়েন্টিন ও মারির উপর লাঠি আর পাথর দিয়ে আক্রমণ চালানো হয়। প্রথমে রাস্তায় ফেলে তারা বেধড়ক মারতে থাকে কোয়েন্টিনকে। কোয়েন্টিনকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে, তাঁকেও আক্রমণ করে দুষ্কৃতীরা। সে সময় প্রাণপণে চিৎকার করতে থাকেন মারি। তাঁর চিৎকারে আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। এর পরেই কোয়েন্টিন ও মারিকে আহত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে ওই জায়গা থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
ওই যুবক-যুবতীকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু, পরে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কোয়েন্টিনের মাধার খুলি ফেটে গিয়েছে। তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমেছে। কানে শুনতেও সমস্যা হচ্ছে। অন্য দিকে, মারির বাঁ-হাত ভেঙে গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে ঠিক কী কারণে কোয়েন্টিদের উপর হামলা চালানো হয়েছে তা জানা যায়নি।