বিপ্লবকুমার দেব। —ফাইল চিত্র।
তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখায় দায় এ বার স্বামী বিবেকানন্দের উপর চাপিয়ে দিল বিজেপি। সৌজন্যে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। দলীয় সদস্যদের ঘরে ঘরে স্বামী বিবেকানন্দের ছবি বিতরণের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, রাজ্যের ৮০ শতাংশ ঘরে যদি স্বামী বিবেকানন্দের ছবি ঝোলে, তাহলেই আগামী ৩০-৩৫ বছর তাঁদের ক্ষমতায় থাকা বাঁধা।
গত বুধবার আগরতলায় বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্যদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন বিপ্লব। সেখানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার গ্রামেও দেখেছি, বাড়ির বৈঠকখানায় জ্যোতি বসু, জোসেফ স্ট্যালিন এবং মাও জে দংয়ের মতো কমিউনিস্ট নেতাদের ছবি ঝুলিয়ে রেখেছেন মানুষ। তার বদলে কি স্বামী বিবেকানন্দের ছবি ঝোলাতে পারি না আমরা?’’ ভারতীয় সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধকে বাঁচিয়ে রাখতে তাঁর সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান বিপ্লব। তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরার ৮০ শতাংশ বাড়িতে যদি স্বামী বিবেকানন্দের ছবি ঝোলে, তাহলেই ৩০-৩৫ বছর ক্ষমতায় থাকা বাঁধা এই সরকারের। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, কথা কম বল। চুপ করে শুধু কাজ করে যাও। কারণ, বেশি কথা বললে কাজ করার শক্তি থাকে না। তাই আমাদের কর্মশক্তি নষ্ট করা উচিত নয়।’’
ভারতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে বাঁচিয়ে রাখতে মহিলা মোর্চার সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিবেকানন্দের বাণী ও ছবি বিলির পরামর্শও দেন বিপ্লব। এর আগে অগস্ট মাসে কোভিড-আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দের উপর লেখা বই বিতরণ করেছিলেন তিনি। যুক্তি ছিল, স্বামীজির ব্যাপারে মানুষ যত জানবেন, তাঁদের মানসিকতা ততই দৃঢ় হয়ে উঠবে। কাজে আরও উৎসাহ পাবেন।
আরও পড়ুন: প্রচারে নেই লালু, চার দশকে এই প্রথম, উদ্বেগ দলের অন্দরে
আরও পড়ুন: মন্দিরের সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ, গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারা হল পুরোহিতকে
বিজেপির স্বামী বিবেকানন্দ স্তুতি নতুন নয়। নামের প্রথম অংশটুকুর (নরেন্দ্র) মিল থাকায় গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীকে স্বামী বিবেকানন্দের আসনে বসিয়ে দেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে। বিহারের জন্য এক গুচ্ছ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ প্রত্যেক বিহারবাসীর এটা গর্ব যে, অটলবিহারী বাজপেয়ীর পর আরও এক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রবিহারী দেশের উন্নয়নে দায়বদ্ধ। আমাদের গর্বের বিষয়, নরেন্দ্র দত্ত নরেন্দ্র মোদীর শরীরে প্রবেশ করেছেন। সে কারণেই ভারত একবিংশ শতাব্দীর অগ্রণী দেশ হয়ে ওঠার চৌকাঠে।’’ তাঁর ওই মন্তব্য নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি।