গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
ভূকৌশলগত দিক থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বন্দর অধিগ্রহণ করে আদানি সংস্থা আসলে ইউরোপে পণ্য পরিবহণে ভারতের স্বার্থ সুরক্ষিত করেছে বলে দাবি করল স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। তাদের মতে, একই সঙ্গে চিনকে পর্যদুস্ত করছে আদানিদের কৌশল। আজ সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ওই সংগঠনের সহ-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন দাবি করেন, ভারতীয় পণ্য ইউরোপে রফতানির ক্ষেত্রে আদানির বন্দর অধিগ্রহণ চিনকে ইউরোপের বাজার ধরার প্রশ্নে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। আদানি সংস্থার বিরুদ্ধে যখন ধারাবাহিক ভাবে কারচুপি ও দুর্নীতির অভিযোগ যখন উঠছে, তখন একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের এ ভাবে পাশে দাঁড়ানো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেলেই সে দেশের কোনও না কোনও বরাত পেয়ে থাকেন শিল্পপতি বন্ধু গৌতম আদানি। প্রধানমন্ত্রীর সদ্য গ্রিস সফরের পরে সে দেশের বন্দর আদানি গোষ্ঠী অধিগ্রহণ করতে চলেছে বলে খবর সামনে এসেছে। বিরোধীরা আদানি-মোদী যোগসাজশের অভিযোগে সরব হলেও, আদানির একের পর এক বন্দর অধিগ্রহণ ভূকৌশলগত ভাবে নয়াদিল্লিকে সাহায্য করেছে, এবং চিনকে সমস্যায় ফেলে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন মহাজন। আজ এক্স (সাবেক টুইটার)-এ মহাজন লিখেছেন, আদানিদের কারণে চিনের স্বার্থ বেশ ভাল রকম ধাক্কা খেয়েছে। আদানিরা হাফিয়া বন্দরে চিনকে হারিয়েছে। কলম্বো বন্দরে হারিয়েছে। আদানিরা ইউরোপের প্রবেশদ্বার মিশরে চিনকে হারিয়েছে। আর এখন গ্রিসের কাভালা, ভালোস ও আলেকজান্দ্রোপলি অধিগ্রহণে চূড়ান্ত কথাবার্তা বলছে। এথেন্সের কাছে পিরাউয়স বন্দরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে, যাতে ভারতের পণ্য ইউরোপে যাওয়ার প্রশ্নে ‘গেটওয়ে’ হয়ে উঠতে পারে গ্রিস। মহাজনের মতে, আগামী দিনে মুম্বই থেকে আরব আমিরশাহি পর্যন্ত পণ্য সমুদ্র পথে, সেখান থেকে সৌদি আরব-জর্ডন হয়ে ইজরায়েলের হাফিয়া বন্দর পর্যন্ত পণ্য যাবে ট্রেনে। ফের হাফিয়া থেকে সমুদ্র পথে পণ্য গ্রিসে পৌঁছনোর পরে সেখান থেকে ট্রেনে ইউরোপের বাজারে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
মহাজন দাবি করেছেন, এর ফলে পণ্য রফতানিতে চিনকে বড় মাপের ধাক্কা দেওয়া সম্ভব হবে। নিজের দেশের মাল ইউরোপের বাজারে নিয়ে যেতে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ নীতি কুড়ি বছর আগে নিয়েছিল চিন। কিন্তু মোদী সরকার নয় বছরের শাসনে পাল্টা সমুদ্রপথে ভারতের পণ্য ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার কৌশল নেয়। এতে পণ্য পরিবহণের খরচ কমায় রফতানি বৃদ্ধি পায়। মহাজনের দাবি, সমুদ্রপথে বন্দর অধিগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে আদানিরা। যার ফলে ইউরোপের বাজারে চিনকে কড়া টক্করে ফেলে দিয়েছে ভারত। পাল্টা বিরোধীদের যুক্তি, জাতীয় স্বার্থের যুক্তি দেখিয়ে এখন স্বজনপোষণকে বৈধতার মোড়ক দিতে চাইছেন সঙ্ঘ নেতারা।