বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দেখা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে। ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে না হলে হিংসার সাক্ষী থাকবে পশ্চিমবঙ্গ— কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আজ এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দিল্লিতে শাহ ছাড়াও একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর আগামিকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার সময় পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা। তার আগে হঠাৎই গত কাল রাতে দিল্লি আসেন শুভেন্দু। আজ সকালে সংসদে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আধ ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক হয়। রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার আশঙ্কা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নড্ডা ও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর বাড়িতে গিয়েও দেখা করেন শুভেন্দু। তৃণমূল নেতৃত্বের প্রশ্ন, তা হলে কি অমিত শাহের পরামর্শেই তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলা নিয়ে রিজিজুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু? ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘ক্রোনোলজি সমঝ যাইয়ে। প্রথমে অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ। তার পরে কিরেন রিজিজুর সঙ্গে বৈঠক।’’ আজ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গেও দেখা করে নন্দীগ্রামের একাধিক রেলপ্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন শুভেন্দু। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও দেখা করেছেন।
দশ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে হয়েছিল। এ বারও যাতে আধা সামরিক বাহিনীর উপস্থিতিতে ভোট হয়, আজ সে জন্য সওয়াল করেন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন করেছিল দল। সেই মামলার শুনানি হয়ে গিয়েছে। রায়দান বাকি।’’ তিনি শাহের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য দরবার করেছেন কি না, তা জানাতে চাননি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু শিবিরের ব্যাখ্যা, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে ভোট করার বিষয়টি নির্ভর করে রাজ্য সরকার, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ ও আদালতের সিদ্ধান্তের উপর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এতে সরাসরি ভূমিকা থাকে না।
সম্প্রতি সিপিএম নেতা বিমান বসুর ঢালাও প্রশংসা করেছেন শুভেন্দু। আজ সাংবাদিক বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শুভেন্দু বাম ও তৃণমূল জমানার তুলনা টেনে বলেন, বাম আমলে বেকারের সংখ্যা ছিল এক কোটি, দশ বছরে তা বেড়ে হয়েছে দু’কোটি। আর বামেদের বিদায়ের সময়ে রাজ্যের মাথায় দু’লক্ষ কোটি টাকার ঋণ এখন হয়েছে ছ’লক্ষ কোটি টাকা। তবে তৃণমূলের বক্তব্য, সাগরদিঘির ফলাফলের পরে শুভেন্দুর মুখে বামেদের প্রশংসা আসলে বাম ও কংগ্রেসকে মহাজোটের বার্তা দেওয়া। এ নিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি বলেছি, যাঁরাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাঁদের উচিত কর্মী সমর্থকদের বলা, মমতাকে একটিও ভোট নয়।... মানুষই ঠিক করে দেবে তৃণমূলকে হারিয়ে কাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা উচিত।’’ আজ একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন শুভেন্দু।
২৯-৩০ মার্চ কলকাতায় গান্ধী মূর্তির সামনে কেন্দ্র বিরোধী ধর্নায় বসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু জানিয়েছেন, ওই দু’দিন নেতাজি মূর্তির সামনে পাল্টা ধর্নায় বসবে বিজেপি।