জমি জট ছাড়াতে কেন্দ্র ও রাজ্যের জোট চান প্রভু

রাজ্যে জমি জটে আটকে ২৫টি ছোট-বড় রেল প্রকল্প। আছে জবরদখলের সমস্যাও। সেই সব জট ছাড়াতে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। শনিবার শিয়ালদহে রেলের এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। তাঁর কাছে সময় চেয়েছি। আশা করছি তিনি ঢাকা থেকে ফিরলেই বৈঠক হবে।’’ প্রভুর মতে, রাজ্য পাশে না দাঁড়ালে রেলের সার্বিক উন্নতি সম্ভব নয়। কোনও প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হলে রাজ্যের সহায়তা পাওয়া একান্ত জরুরি। তাই পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যগুলিকেও রেল প্রকল্পের সঙ্গে জড়াতে চাইছে কেন্দ্র। কী ভাবে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৫ ০৩:৪১
Share:

শনিবার শিয়ালদহে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

রাজ্যে জমি জটে আটকে ২৫টি ছোট-বড় রেল প্রকল্প। আছে জবরদখলের সমস্যাও। সেই সব জট ছাড়াতে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। শনিবার শিয়ালদহে রেলের এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। তাঁর কাছে সময় চেয়েছি। আশা করছি তিনি ঢাকা থেকে ফিরলেই বৈঠক হবে।’’

Advertisement

প্রভুর মতে, রাজ্য পাশে না দাঁড়ালে রেলের সার্বিক উন্নতি সম্ভব নয়। কোনও প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হলে রাজ্যের সহায়তা পাওয়া একান্ত জরুরি। তাই পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যগুলিকেও রেল প্রকল্পের সঙ্গে জড়াতে চাইছে কেন্দ্র। কী ভাবে? রেলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, যে রাজ্যে রেলের প্রকল্প হবে, সংশ্লিষ্ট সরকারকে তার অংশীদার করা হবে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ ভাবে ওই প্রকল্পের খরচ বহন করবে। তবে মোট ব্যয়ের কত অংশ কেন্দ্র আর কতটা রাজ্য বহন করবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যাত্রী পরিষেবার পরিকাঠামো উন্নয়নে তাঁর সরকার যে বদ্ধপরিকর সে কথা জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই ২০টি রাজ্য যৌথ প্রকল্পে সম্মতি জানিয়েছে। আশা করি, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও রাজি হবেন।’’

কেন রাজ্যগুলিকে যৌথ প্রকল্পে জড়াতে চাইছে রেল?

Advertisement

এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে জমি-ই মূল সমস্যা। রাজ্য না চাইলে জমি পেতে কালঘাম ছুটে যায়। রাজ্য সঙ্গে থাকলে রেলের প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে তেমন সমস্যায় পড়তে হবে না। তা ছাড়া যৌথ ভাবে করা প্রকল্পে রাজ্য যোগদান করলে অর্থিক বোঝাও অনেকটা কমে যাবে বলে রেল কর্তাদের বক্তব্য। কোন প্রকল্প বেশি প্রয়োজন, সে সম্পর্কে রাজ্যই বেশি স্বচ্ছ ধারণা দিতে পারে।

দখলদার উচ্ছেদও বড় সমস্যা। যেহেতু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায় রাজ্য সরকারের, তাই দখলদার উচ্ছেদের জন্য তাদের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়। সম্প্রতি মালদহে হকারদের হাতে এক আরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে ওই রেলকর্তা বলেন, যে ভাবে স্টেশন ও লাগোয়া এলাকায় জবরদখল বাড়ছে তাতে প্রকল্প শুরু করাই দায় হয়ে পড়েছে। ওই দখলদারদের পিছনে রাজনৈতিক মদত থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। রাজ্য যদি রেল প্রকল্পে যুক্ত থাকে, তা হলে দ্রুত এ সব সমস্যা মিটে যাবে বলে মত রেলকর্তাদের।

এ দিন রেলমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকে ওঠে কলকাতা মেট্রোর বেহাল দশার প্রসঙ্গও। দেশের মধ্যে এই শহরেই প্রথম চালু হয়েছিল মেট্রো রেল। অথচ, নিত্যনতুন যান্ত্রিক গোলযোগে মুখ থুবড়ে পড়েছে সেই পরিষেবা। যখন দিন কয়েকের মধ্যে দিল্লির পাতালে ছুটবে চালকহীন মেট্রো, তখন এ শহরের মেট্রোর দরজা বন্ধ না হওয়া কিংবা শীতাতপ ব্যবস্থা বিকল হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে আকছার। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘চটজলদি এই সমস্যার সমাধান হবে না। তবে কলকাতা মেট্রোর হাল ফেরাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ লোকাল ট্রেনের বেহাল অবস্থা মেটাতেও যে রেল উদ্যোগী, তা-ও জানিয়েছেন প্রভু।

রেলমন্ত্রীর নির্দেশেই গত ক’দিন ধরে চলছে ‘রেল উপভোক্তা পক্ষ।’ সেই সূত্রেই দেশ জুড়ে বিভিন্ন জোনের জেনারেল ম্যানেজারেরা লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেনে উঠে সরাসরি যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। শিয়ালদহে রেলমন্ত্রীর অনুষ্ঠান ছিল ওই কর্মসূচিরই অঙ্গ। এ দিন তিনি পতাকা নেড়ে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার চারটি লোকাল ট্রেন, হাওড়া স্টেশনে ওয়াই-ফাই পরিষেবা, কাঁচরাপাড়া রেলওয়ে স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-শিয়ালদহ চারটি শাখায় ডবল লাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ভাল কাজের জন্য পূর্ব রেলকে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কারও দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement