ফাইল চিত্র।
ধর্মস্থান ও ধর্মীয় আচারে মহিলাদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে বিচার শুরুর আগে বিচার্য বিষয়গুলি ঠিক করে নেবে সুপ্রিম কোর্টের নয় সদস্যের বেঞ্চ। ঠিক হবে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর সময়সীমা। সোমবার প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি এই বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অবহিত করা হবে। তবে শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের প্রসঙ্গ এই সাংবিধানিক বেঞ্চের আওতায় থাকছে না বলেই সোমবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে।
ধর্মীয় বিশ্বাস বনাম আইনি অধিকারের বৃহত্তর দিকটি খতিয়ে দেখার প্রশ্নটি অবশ্য সামনে এসেছিল শবরীমালা বিতর্কের সূত্রেই। গত নভেম্বরে শবরীমালা রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আবেদনের শুনানির সময়ে শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ধর্মস্থানে মহিলাদের প্রতি বৈষম্যে নিয়ে বিতর্ক শুধু শবরীমালাতেই সীমাবদ্ধ নেই, এই বিতর্ক অন্য অনেক ক্ষেত্রেই ছড়িয়ে রয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের রায়ে শবরীমালায় সব বয়সি মহিলাদের প্রবেশাধিকার মিলেছিল ঠিকই। তবে এ সঙ্গেই প্রশ্ন ওঠে ধর্মীয় আচারে লিঙ্গ বৈষম্যের আরও কিছু বিষয়কে নিয়ে। যার মধ্যে রয়েছে— মসজিদে মুসলিম মহিলাদের প্রবেশাধিকার না থাকা, পার্সি সম্প্রদায়ের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে সেই মহিলাদের অগ্নি মন্দিরে প্রবেশাধিকার না দেওয়া, দাউদি বোহরা মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়েদের যোনিচ্ছেদের বিষয়টি। গত নভেম্বরে শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ মহিলাদের প্রতি বৈষম্যের এই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার বিষয়টি বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে পাঠিয়ে দেয়। দেশে নাগরিকদের ধর্মাচারণের সংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার ও ধর্মস্থানে মহিলাদের প্রতি বঞ্চনার বৃহত্তর আইনি দিকটি খতিয়ে দেখবে নয় সদস্যের বেঞ্চ। আইনজীবী ফলি নরিম্যান আজ শীর্ষ আদালতের সামনে সওয়াল করেন, শবরীমালা নিয়ে রায় হয়ে গিয়েছে। ফলে এটি যেন বেঞ্চের সামনে না আসে। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘শবরীমালার পুনর্বিবেচনার মামলা আমাদের সামনে নেই। এ ব্যাপারে বিচার করছি না। আমরা বৃহত্তর দিকটি দেখব।’’ অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল বোর্ডের আইনজীবী কপিল সিব্বলের যুক্তি, ধর্মীয় আচারের বিষয় এতই ব্যাপক যে তা আদালতের বিচারসীমায় আসা কঠিন।