প্রতীকী ছবি।
দেশে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখারই সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির একটি বেঞ্চে বুধবার ২-১ ভোটে ওই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যার ফলে, সুপ্রিম কোর্টের স্ট্যাটিউট বুক (বিধি গ্রন্থ) থেকে আর বাদ পড়ছে না সর্বোচ্চ শাস্তি- মৃত্যুদণ্ড।
তিন সদস্যের ওই বেঞ্চের প্রবীণতম সদস্য, বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ অবশ্য মৃত্যুদণ্ড অবলোপের পক্ষেই তাঁর মতামত দেন। তাঁর যুক্তির সপক্ষে বিচারপতি জোসেফ ২৬২তম আইন কমিশনের রিপোর্টের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ওই রিপোর্ট বলছে, দেশে অপরাধ কমাতে পারেনি মৃত্যুদণ্ড।
বিচারপতি জোসেফ এও বলেন, আদালতের এজলাসে এজলাসে মামলার শুনানির সময় সাধারণ মানুষও হাজির থাকেন। তাঁরা প্রায় কেউই মৃত্যুদণ্ডাদেশ শুনতে চান না। তা ছাড়াও, মৃত্যুদণ্ড অবলোপের জন্য দেশজুড়ে জোরালো দাবিও উঠছে। এমনকি, যে অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, শেষ মুহূর্তে তদন্তকারী সংস্থাগুলিও তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য আদালতের উপর কার্যত, চাপ সৃষ্টি করে। তখন তদন্তকারী সংস্থাগুলিও আদালতকে আবেগ, অনুভূতি আর জনগণের মতামতের কথা ভাবার অনুরোধ জানায়।
আরও পড়ুন- শবরীমালার তীর্থযাত্রায় যাওয়ার ‘শাস্তি’! কেরলের সমাজকর্মীকে সাসপেন্ড করল বিএসএনএল
আরও পড়ুন- ৬৫ পয়সায় ১ লিটার! সমুদ্রের জলেই এ বার তৃষ্ণা মেটানো যাবে
কিন্তু বিচারপতি জোসেফের ওই যুক্তি তিন সদস্যের বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য বিচারপতি দীপক গুপ্তা ও বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা মানতে রাজি হননি। তাঁরা বলেন, মৃত্যুদণ্ড বৈধ ও প্রয়োজনীয়। বেঞ্চের সিদ্ধান্ত আদালতে পড়ে শোনানোর সময় বিচারপতি দীপক গুপ্তা বলেন, ‘‘মৃত্যুদণ্ড একেবারেই বৈধ শাস্তি। অপরাধ দমনে তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়ও। এ ব্যাপারে আটের দশকে একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার বিষয়টি নিয়ে আর কোনও বিতর্কের প্রয়োজন নেই।’’
তবে যে মামলার প্রেক্ষিতে মৃত্যুদণ্ড অবলোপের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তিন সিনিয়র বিচারপতির মধ্যে, সেই মামলার মূল অভিযুক্ত ছান্নুলাল বর্মার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে তাকে এ দিন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে তিন বিচারপতিই সহমত হয়েছেন।