সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
নয়াদিল্লি, ২১ অক্টোবর: বিচারপতি সরাসরি প্রশ্ন করলেন, ‘‘আপনারা চান না ভারত ধর্মনিরপেক্ষ থাকুক?’’ আইনজীবী উত্তর দিলেন, ‘‘আমরা বলছি না যে ভারত ধর্মনিরপেক্ষ নয়। আমরা শুধু সংবিধান সংশোধনীর বিরোধিতা করছি।’’ বিচারপতি
তখন বললেন, ‘‘একাধিক রায়ে এ কথা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানের মূল কাঠামোর অঙ্গীভূতই ছিল।’’
১৯৭৬ সালে ৪২তম সংশোধনীতে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দু’টি ঢোকানো হয়েছিল। তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন বলরাম সিংহ, বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এবং অশ্বিনী উপাধ্যায়। সোমবার বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ মামলাটি শুনছিল। সেখানেই মৌখিক ভাবে বিচারপতি খন্না বলেন, ‘‘একাধিক রায়ে এ কথা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানের মূল কাঠামোর অঙ্গীভূতই ছিল। কেউ যদি সাম্য আর ভ্রাতৃত্ব শব্দ দু’টি দেখেন এবং সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত অধিকারগুলি দেখেন, পরিষ্কার বোঝা যাবে, ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য হিসেবেই দেখা হয়েছে।’’
আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন দাবি করেন, বি আর অম্বেডকর মনে করতেন, সমাজতন্ত্র ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করে। তার উত্তরে বিচারপতি খন্না বলেন, ‘‘সমাজতন্ত্রের অর্থ সুযোগ ও সম্পদের সাম্যও হয়। আমরা বরং পাশ্চাত্য অর্থে শব্দটাকে না দেখি!’’
স্বামী প্রশ্ন তোলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা গৃহীত হয়েছিল ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯-এ। সেখানে পরে শব্দ যোগ করাটা স্বেচ্ছাচার। মনে হতে পারে যে, ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯-ই ধর্মনিরপেক্ষ এবং সমাজতন্ত্র বলে ঘোষিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি খন্না বলেন, ‘‘ওই শব্দ দু’টি বন্ধনীর মধ্যে আছে। ফলে যে কেউই বুঝবে যে ওগুলো পরের সংযোজন।’’ তিনি উল্লেখ করেন, জাতির ‘ঐক্য’ এবং ‘সংহতি’ শব্দ দু’টিও পরের সংযোজন। আগামী সপ্তাহে ফের শুনানি হবে।
সংবাদ সংস্থা