Indian Army

সেনায় মহিলাদের সাহায্য করা উচিত, তবে কত দূর পর্যন্ত? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

আবেদনকারীদের আর্জিতে সাড়া দেওয়া কঠিন মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি চন্দ্রচূড়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:৫৬
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

সেনায় পার্মানেন্ট কমিশনে যাওয়ার যোগ্যতার সময়সীমা বাড়ানোর জন্য মহিলা অফিসারদের আর্জি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের মতে, সময়সীমা বাড়ালে ভবিষ্যতে তার গুরুতর প্রভাব পড়বে। বৃহস্পতিবার এই রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ। সেনাবাহিনীতে কর্মরত মহিলা অফিসারদের সাহায্য করা উচিত মনে করলেও বেঞ্চের প্রশ্ন, এ ক্ষেত্রে ঠিক কোথায় সীমারেখা টানা উচিত?

চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি এক ঐতিহাসিক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে পুরুষ অফিসারদের মতোই কম্যান্ড পজিশনে স্থায়ী ভাবে মহিলাদের নিয়োগ করা যাবে। ওই রায়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি খারিজ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ১৪ বছর কাজ করেছেন, এমন মহিলা অফিসারদের ১০টি পার্মানেন্ট কমিশনড পদের জন্য বিবেচনা করা যাবে বলেও রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ, যোগ্যতার ভিত্তিতে পার্মানেন্ট বা স্থায়ী কমিশনের মাধ্যামে মহিলা অফিসারেরা কর্নেল বা তার উঁচু পদের জন্য বিবেচিত হবেন। ওই রায়ে আরও বলা হয়েছিল, যে সমস্ত মহিলা অফিসার ১৪ বছর বা তার বেশি সেনার শর্ট সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এ কাজ করেছেন, কিন্তু পার্মানেন্ট কমিশনে যেতে পারেননি, তাঁরা ২০ বছর কাজের সুযোগ পাবেন। সুপ্রিম কোর্টে মহিলা অফিসারদের আবেদন ছিল, ওই যোগ্যতার সময়সীমা বাড়ানো হোক। আবেদনকারীদের সকলেই ১৪ বছর কর্মজীবন থেকে মাত্র এক মাসের জন্য যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন। শীর্ষ আদালতের কাছে তাঁদের আর্জি, তাঁদের ২০ বছর কাজের জন্য একটি বিকল্প দেওয়া হোক।

আবেদনকারীদের আইনজীবী মীনাক্ষি লেখির যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কেন্দ্রীয় সরকার মান্যতা দেয় গত জুলাইতে। ফলে ওই মহিলা অফিসারদের ২০ বছরের কাজের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। এবং ২০ বছরের পেনশনের সুবিধাও তাঁদের প্রাপ্য হিসাবে ধরা হোক। তবে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ আবেদনকারীদের আর্জি খারিজ করে বলেছে, “আমাদের রায়ে বলা হয়েছিল, রায়ের দিন পর্যন্ত যাঁরা ১৪ বছরের জন্য সেনায় কাজ করেছেন, তাঁরাই পেনশন-সহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন। ওই সময়সীমা পরিবর্তন করা হলে পরবর্তী ব্যাচগুলির জন্যও তা বদলাতে হবে।” রায়দানকারী বেঞ্চের অপর এক বিচারপতি কে এম জোসেফের মতে, “(এই আবেদনে সাড়া দিলে) এর ফলে প্রতিটি ব্যাচের যাঁরা ১৪ বছরের কাজ শেষ করবেন, তাঁদের উপর গুরুতর প্রভাব পড়বে।”

Advertisement

আরও পড়ুন: পয়লা নভেম্বরের মধ্যেই টিকা সব রাজ্যে, তৈরি থাকতে নির্দেশ মার্কিন প্রশাসনের

আরও পড়ুন: ঘৃণা-ভাষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়কের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ফেসবুক​

Advertisement

সরকারের পক্ষে আইনজীবী কর্নেল বালসুব্রহ্মণ্যম আবেদনকারীদের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, “পার্মানেন্ট কমিশন সংক্রান্ত নির্দেশ পাশের দিন অর্থাৎ ১৬ জুলাই বলা হয়েছিল, যাঁরা রায়ের দিন (১৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ১৪ বছর কাজ করেছেন, তাঁরাই পেনশনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এখন এর বদল ঘটালে, বাস্তবে তা প্রয়োগ করা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, প্রতি ছ’মাস অন্তর একটি ব্যাচ কমিশনড হয়। আমরা এ ধরনের সুবিধা দিতে পারি না।”

গোটা মামলায় আবেদনকারীদের আর্জিতে সাড়া দেওয়া কঠিন মনে করেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তাঁর মতে, আবেদনকারী ওই মহিলা অফিসারেরা সকলেই দেশের জন্য কাজ করছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য, “আমাদের সকলের মনে হয়, আবেদনকারীদের জন্য কিছু করা উচিত।” তা সত্ত্বেও বিচারপতির প্রশ্ন, “তবে কোথায় সীমারেখা টানব?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement