আবেদন শুনল না সুপ্রিম কোর্ট। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কিশোরীর বুকে হাত দিলে বা তার পাজামার দড়ি খোলার চেষ্টা করলে তা ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা নয় বলে রায় দিয়েছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে একটি আবেদন জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদন শুনল না শীর্ষ আদালত। বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী এবং বিচারপতি প্রসন্ন বি ভারালের বেঞ্চে উঠেছিল মামলাটি। যদিও সোমবার মামলাকারী বা তাঁর আইনজীবী শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না। এর পরেই আবেদন খারিজ করে বেঞ্চ জানিয়েছে, ইলাহাবাদ হাই কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা এই মামলা তারা শুনবে না।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি যারা করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে চলা মূল মামলার কোনও যোগ নেই। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ত্রিবেদী এবং বিচারপতি ভারালের বেঞ্চে মামলা শুরু হওয়ার পরে আইনজীবী সওয়াল করে ‘বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও’ স্লোগানের প্রসঙ্গ তোলেন। তখন বিচারপতি ত্রিবেদী তাঁকে থামিয়ে জানান, কোর্টে কোনও ‘লেকচার’ চলবে না। এর পরে তিনি জিজ্ঞেস করেন, মামলাকারীর যে আইনজীবীর আদালতে উপস্থিত থাকার কথা, তিনি নেই কেন। এমনকি, মামলাকারীও কেন উপস্থিত নেই কোর্টে, সেই প্রশ্নও করেন বিচারপতি ত্রিবেদী। এর পরেই বেঞ্চ মামলাটি খারিজ করে দেয়।
১১ বছরের এক কিশোরীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল পবন এবং আকাশ নামে দু’জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তাঁরা নির্জন কালভার্টে কিশোরীর বুকে হাত দিয়েছিলেন। তার পাজামার দড়ি খোলার চেষ্টা করেছিলেন। নিম্ন আদালত পকসো আইনের ১৮ নম্বর (অপরাধের চেষ্টা) ধারার ৩৭৬ নম্বর উপধারা প্রয়োগ করে। যদিও হাই কোর্ট অভিযুক্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪-বি (পোশাক খুলে ফেলার জন্য বলপ্রয়োগ) ধারায় বিচার করার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, পকসোর ৯ এবং ১০ ধারায় বিচার করার কথা বলে। বিচারপতি রামমনোহর নারায়ণ মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাতে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার মামলা খাটে না। তবে এটি অবশ্যই যৌন হেনস্থার ঘটনা। ধর্ষণের চেষ্টার মামলা দায়ের করতে গেলে সরকারি আইনজীবীকে প্রমাণ করতে হবে যে, ঘটনাটি ধর্ষণের দিকেই এগোচ্ছিল। অপরাধ ঘটানোর প্রস্তুতি এবং প্রকৃত প্রচেষ্টার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এই রায় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।