সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি সিট গুজরাত দাঙ্গায় অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সহযোগিতা’ করেছে বলে মন্তব্য করলেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গুজরাত দাঙ্গায় অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সহযোগিতা’ করেছে বলে সুপ্রিম কোর্টে মন্তব্য করলেন কংগ্রেস নেতা ও আইনজীবী কপিল সিব্বল। এই মন্তব্য নিয়ে কোর্টের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। ওই অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গুজরাত দাঙ্গার মামলায় মোদী-সহ অভিযুক্তদের ক্লিন চিট দেওয়ার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন জাকিয়া জাফরি। দাঙ্গার সময়ে আমদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটিতে হামলায় নিহত হন জাকিয়ার স্বামী ও প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি।
গুজরাত দাঙ্গার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্তে মোদী-সহ বেশ কযেক জন অভিযুক্তকে ক্লিন চিট দেওয়া হয়।
গত কয়েক দিন ধরে সিটের তদন্তে বিভিন্ন ত্রুটির কথা তুলে ধরছেন জাকিয়ার আইনজীবী সিব্বল। আগেই তিনি জানান, সিটের কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। তারা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল ও আরএসএসের সদস্যদের রক্ষা করেছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে সিট। তার পুরস্কারও দেওয়া হয়েছে। সিটের প্রধান (আর কে রাঘবন) পরে সাইপ্রাসে হাইকমিশনারের পদে নিযুক্ত হন। আমদাবাদের পুলিশ প্রধানের কল রেকর্ড থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনি অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার পরেও তাঁকে গুজরাত পুলিশের ডিজি-র পদে নিয়োগ করা হয়।’’
এ দিনও সিটের সঙ্গে অভিযুক্তদের ‘সহযোগিতা’ নিয়ে সওয়াল করেন সিব্বল। তিনি বলেন, ‘‘সিট গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পরীক্ষা করেনি। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হওয়া স্টিং অপারেশনের টেপও পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। বাজেয়াপ্ত করা হয়নি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মোবাইল। সিটের সঙ্গে অভিযুক্তদের সহযোগিতার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।’’ সিব্বলের কথায়, ‘‘রাজনীতিকেরাও সহযোগিতা করছিলেন। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ করা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের নাম নথিবদ্ধ করা হয়নি। এ থেকেই রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়টি স্পষ্ট। প্রায় সব ক্ষেত্রেই অভিযোগকারীরা এফআইআরের প্রতিলিপি পাননি।’’ সিব্বলের মতে, ‘‘এই মামলায় ন্যায়বিচারই প্রকৃত শিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
কিন্তু সিব্বলের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বিচারপতি এ এম খানবিলকর, বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও বিচারপতি সি টি রবিকুমারের বেঞ্চ। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘কোর্টের নির্দেশে তৈরি সিটের ক্ষেত্রে সহযোগিতা শব্দটি বেশ জোরালো। পুলিশ অভিযুক্তদের সঙ্গে সহযোগিতা করে থাকতে পারে।’’ বিচারপতিরা বলেন, ‘‘(গুজরাত দাঙ্গার) অন্য মামলায় এই সিটই চার্জশিট দিয়েছে। অভিযুক্তেরা দোষী প্রমাণিত হয়েছে। সেখানে তো এমন কোনও অভিযোগ ওঠেনি।’’ আগামিকাল ফের এই মামলার শুনানি হবে।