কাবেরী জলবন্টন চুক্তি নিয়ে আজ রায় শোনাল সুপ্রিম কোর্ট।
কাবেরী নদীর জল নিয়ে দুই প্রতিবেশী রাজ্যের মধ্যে চলা বিবাদের মীমাংসা করে শুক্রবার রায় শোনাল সুপ্রিম কোর্ট। কাবেরী জল বন্টন চুক্তি নিয়ে কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুর মধ্যে সঙ্ঘাত বহু দিনের। পড়শি রাজ্যের সঙ্গে জল ভাগাভাগি নিয়ে বিবাদ এক সময় রূপ নেয় দাঙ্গা-হাঙ্গামার।
এ দিন সকালে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি অমিতাভ রায় এবং বিচারপতি এএম খালউইলকারের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কাবেরী নদী থেকে কর্নাটক অতিরিক্ত ১৪.৭৫ টিএমসিএফটি (হাজার মিলিয়ন কিউবিক ফুট) জল পাবে। তামিলনাড়ু এতদিন পেয়ে আসছিল ১৯২ টিএমসিএফটি জল। আজকের পর থেকে তারা পাবে ১৭৭.২৫ টিএমসিএফটি।
‘কাবেরী জলবন্টন বিবাদ ট্রাইব্যুনাল' বা সিডব্লিউডিটি-র ২০০৭ সালের শেষ রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তামিলাড়ু, কর্নাটক এবং কেরল৷ ওই রায়ে বলা হয়, ২৭০ টিএমসিএফটি জল পাবে কর্নাটক, ১৯২ টিএমসি পাবে তামিলনাড়ু, ৩০ টিএমসিএফটি কেরল এবং ৬ টিএমসিএফটি পুদুচেরী। সেই সময় তামিলনাড়ুকে জল দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের তীব্র বিরোধিতা করেন বিজেপি এবং জেডিএস নেতারা। তাদের দাবি ছিল, ১৯২ টিএমসিএফটি-র বদলে তামিনলাড়ুকে ১৩২ টিএমসি জল দেওয়া হোক। আদালতের নির্দেশ না মানার জন্য শীর্ষ আদালতে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কর্নাটক সরকারকে। জল বিবাদের শান্তিপূর্ণ মীমাংসার জন্য কেন্দ্রকে কাবেরী ম্যানেজমেন্ট বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: নোটবন্দিকে কাজে লাগিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন নীরব মোদী!
কাবেরী জলবন্টন নিয়ে আগের রায় পাল্টে ২০১৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর নতুন নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে বলা হয় আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন তামিলনাড়ুকে ১২ হাজার কিউসেক করে জল দিতে হবে। সেই নির্দেশেরও বিরোধিতা করে কর্নাটক। দাবি ছিল, এই পরিমাণ জল ছাড়তে গেলে দিনের হিসাবে জলের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে। ফলে রাজ্যে পানীয় জলের অভাব দেখা দেবে। জলযুদ্ধে জমি ছাড়তে নারাজ ছিল তামিলনাড়ুও। ফলে, বিরোধ শুধুমাত্র শীর্ষ আদালতের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি।
আরও পড়ুন: রাহুলদের নিশানায় বিজেপির যাত্রাভঙ্গ
তামিল-কন্নড় সংঘর্ষে এক সময় উত্তাল হয়ে ওঠে বেঙ্গালুরু। কর্নাটক জুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন কৃষকেরা। বেঙ্গালুরুতে একের পর এক তামিলনাড়ুর নম্বরপ্লেট লাগানো বাস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। চেন্নাইতে কন্নড় রেস্তোরাঁ লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। চলতি বছর ৯ জানুয়ারি শীর্ষ আদালত জানায় আগামী এক মাসের মধ্যে জলবন্টন নিয়ে প্রয়োজনীয় রায় দেওয়া হবে। রায়দানের আগে কোনও সংস্থা এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না বলেও জানানো হয় আদালতের তরফ থেকে।