ফাইল ছবি
হিন্দু স্বামীহারার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী তাঁর বাপের বাড়ির দিকের আত্মীয়েরাও হতে পারেন বলে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
গুরুগ্রামের বাসিন্দা শের সিংহ ১৯৫৩ সালে মারা যান। শের সিংহ ও তাঁর স্ত্রী জগনোর কোনও সন্তান নেই। ১৯৫৬ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন কার্যকর হওয়ার পরে পারিবারিক কৃষিজমির অর্ধেকের অধিকারী হন জগনো। পরে পারিবারিক সমঝোতার মাধ্যমে তিনি সেই জমি তাঁর
ভাইপোদের দেন।
১৯৯১ সালে তাঁর ভাইপোরা গুরুগ্রামের সাব-জজের আদালতে ওই জমির মালিকানার ডিক্রি চেয়ে মামলা করেন। জগনো ভাইপোদের দাবির বিরোধিতা করেননি। বরং লিখিত বিবৃতি পেশ করে তাঁদের অধিকার স্বীকার করে নেন। ফলে দায়রা আদালত জগনোর ভাইপোদের পক্ষে ডিক্রি জারি করে।
কিন্তু জগনোর স্বামীর ভাইয়ের উত্তরাধিকারীরা সেই ডিক্রিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন। সেই মামলাতেই আজ এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে আবেদনকারীদের আইনজীবীরা জানান, বাপের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে মিলে হিন্দু স্বামীহারা কখনও হিন্দু যৌথ পরিবার তৈরি করতে পারেন না। তাঁরা আরও জানান, পরিবারের যে সদস্যদের ওই সম্পত্তিতে আগে থেকেই অধিকার আছে তাঁরাই ওই সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক সমঝোতা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ওই সমঝোতা গ্রহণযোগ্য নয়। অন্য দিকে জগনোর ভাইপোদের আইনজীবীরা জানান, এ ক্ষেত্রে পরিবার শব্দটিকে বৃহত্তর অর্থে বিচার করতে হবে।
বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি আর সুভাষ রেড্ডির বেঞ্চ জানিয়েছে, হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ১৫(১)(ডি) ধারা অনুযায়ী, হিন্দু মহিলার বাপের বাড়ির দিকের আত্মীয়েরাও সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারেন। পরিবার শব্দটিকে যে বৃহত্তর অর্থে বিচার করতে হবে তা মেনে নিয়েছে বেঞ্চ।
বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘আবেদনকারীদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, যাঁরা সম্পত্তির উত্তরাধিকার পেয়েছেন তাঁরা আবেদনকারীদের পরিবারের কাছে নিছকই আগন্তুক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁদের আগন্তুক হিসেবে গণ্য করা যাবে না।’’ আইনজীবী শৌর্য মণ্ডলের মতে, ‘‘পারিবারিক সমঝোতা বলতে কী বোঝায় তা এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিচার্য বিষয় ছিল। সেই বিষয়টি স্থির করতে গিয়েই এ ক্ষেত্রে পরিবার বলতে কী বোঝায় তা স্থির করতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ওই মহিলার ভাইপোরা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।’’