বিচারপতিদের যুক্তি ছিল, পশ্চিমবঙ্গ বড় রাজ্য। এক একটি রাজ্য ৮০ হাজার, ৯০ হাজার যৌন কর্মীর হিসেব দিয়েছে। রাজ্যের আইনজীবী আর বসন্ত বলেন, এডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তালিকা ছাড়াও সরকারের কর্মীরা মাঠে নেমে কাজ করছেন।
ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে যৌন কর্মীর সংখ্যার সরকারি হিসেব দেখে সন্দেহ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। কোভিডের সময়ে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া যৌন কর্মীদের রেশন বিলির নির্দেশের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে ৬,২২৭ জন যৌন কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩,৭৮৪ জনের রেশন কার্ড রয়েছে। ২০০২ জন যৌন কর্মীকে ‘খাদ্যসাথী’ প্রকল্পে কুপন বিলি করা হয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের বেঞ্চ জানায়, যৌন কর্মীদের মোট সংখ্যার হিসেব একেবারেই বাস্তবসম্মত নয়। মহারাষ্ট্র সরকারের পরিসংখ্যান নিয়েও একইভাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত।
কোভিডের প্রথম ধাক্কার পরেই ২০২০-র সেপ্টেম্বরে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, পরিচয়পত্র বা রেশন কার্ড না থাকলেও যৌন কর্মীদের রেশন দিতে হবে। এ বিষয়ে কতখানি কাজ এগিয়েছে, তা নিয়ে বাকি সব রাজ্য রিপোর্ট দিলেও, পশ্চিমবঙ্গ রিপোর্ট না দেওয়ায় জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্টে তোপের মুখে পড়েছিল। রাজ্য প্রশাসন এ বার রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, যৌন কর্মীদের আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ডের বন্দোবস্ত করতে হবে। আদালত-মিত্র আইনজীবী পীযূষকান্তি রায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার রেশন কার্ডের বদলে ‘খাদ্যসাথী’ কুপন বিলি করেছে। রাজ্য সরকার গোটা রাজ্যের যে হিসেব দিয়েছে, কলকাতার একটি যৌন পল্লিতেই তার থেকে বেশি যৌন কর্মী রয়েছেন বলেও জানান তিনি। বিচারপতিরা বলেন, পরিসংখ্যান বাস্তবসম্মত নয়। রাজ্য সরকারকে শুধুমাত্র সরকারের এডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তালিকার ভরসায় থাকলে চলবে না। তার বাইরেও যৌন কর্মীদের চিহ্নিত করে, কোনও পরিচয়পত্র না থাকলেও রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড দিতে হবে। আধার কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে নিয়ম শিথিল করতে হবে।
বিচারপতিদের যুক্তি ছিল, পশ্চিমবঙ্গ বড় রাজ্য। এক একটি রাজ্য ৮০ হাজার, ৯০ হাজার যৌন কর্মীর হিসেব দিয়েছে। রাজ্যের আইনজীবী আর বসন্ত বলেন, এডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তালিকা ছাড়াও সরকারের কর্মীরা মাঠে নেমে কাজ করছেন।