ছবি: সংগৃহীত
লোকসভা ভোটের দু’বছর বাকি। তার আগে ফের গাঁধী পরিবারকে বিঁধতে নতুন রণকৌশল নিচ্ছে বিজেপি।
ফের বফর্স মামলা খোলা। অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কপ্টার দুর্নীতিতে চার্জশিট পেশ। রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে একই সঙ্গে হরিয়ানা ও রাজস্থানে দুর্নীতির তদন্ত। চারটি অস্ত্রেই বিজেপি নেতৃত্ব নতুন করে সনিয়া-রাহুল গাঁধীকে বিড়ম্বনায় ফেলতে চাইছেন।
শুক্রবারই বিজেপি নেতা অজয় অগ্রবালের আর্জিতে অক্টোবর মাসে ফের বফর্স মামলা নিয়ে শুনানিতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই দিনে অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কপ্টার দুর্নীতিতে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। তাতে প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এস পি ত্যাগীর নাম রয়েছে ঠিকই। কিন্তু এই দুর্নীতিতেও সনিয়া গাঁধী ও তাঁর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলের নাম জড়িয়েছিল। পাশাপাশি সনিয়ার জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে দুর্নীতির মামলাতেও গাঁধী পরিবারের ঘরে কাদা ছেটাতে বিজেপি তৈরি। রবার্টের সঙ্গে জড়িত সংস্থার বিরুদ্ধেও রাজস্থানে এফআইআর করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: মোদীর বিরুদ্ধে সাংসদের তোপ
গাঁধী পরিবারকে নিশানা করে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করা ছাড়াও বিজেপির দু’টি রণকৌশল রয়েছে। এক, এ নিয়ে হইচই করলে নোট বাতিল থেকে আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরানো যাবে। দুই, কংগ্রেসের গায়ে কাদা ছেটাতে পারলে অন্য বিরোধী দলগুলি তাদের পাশে যেতে দোনামনা করবে। ফলে বিরোধী জোটকেও নড়বড়ে করে দেওয়া যাবে।কংগ্রেস নেতারা এই সব দুর্নীতির তদন্তের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছেন। তাঁদের যুক্তি, নতুন করে বফর্স মামলা খোলার জন্য যিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পেশায় আইনজীবী সেই অজয় অগ্রবাল ২০১৪-র লোকসভা ভোটেই রায়বরেলীতে সনিয়ার বিরুদ্ধে ভোটে লড়ে হেরে যান। কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনুসিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘মোদী সরকারের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই তাঁদের ফোনে আড়ি পাতছে। আগে প্রধানমন্ত্রী এই সব মন্ত্রীদের নাম জানান। ব্যপম, পানামা নথির কী হয়েছে, তার জবাবদিহি হোক।’’ কিন্তু অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপি নেতারা যুক্তি দিচ্ছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক কোথায়!
বফর্স নিয়ে মূল অভিযোগ, ২০০৫-এ দিল্লি হাইকোর্ট বঅভিযুক্ত হিন্দুজা ভাইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করে দেওয়ায় সিবিআই কোর্টের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করতে চেয়েছিল। ইউপিএ সরকার অনুমতি দেয়নি। কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, ২০১৪-তেও সোহরাবুদ্দিন মামলায় অমিত শাহকে ছাড় দেওয়ার বিরুদ্ধে সিবিআইকে আর্জি জানানোর অনুমতি দেয়নি মোদী সরকার।
অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড মামলায় সনিয়া বা অহমেদ পটেলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই বলে কংগ্রেস নেতাদের দাবি। তাঁদের যুক্তি, প্রতিরক্ষা বরাত পাওয়ার কাজে লাগানো ‘মিডলম্যান’-দের নথিতে দেখা গিয়েছে, তাঁরা সনিয়া, আহমেদ পটেলকে প্রভাবশালী বলে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু কপ্টারের বরাত পাইয়ে দিতে তাঁরা ঘুষ নিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই।
গলার কাঁটা একমাত্র রবার্ট বঢরা। হরিয়ানায় জমি কেলেঙ্কারিতে রবার্টের নাম রয়েছে। তাঁকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডাই সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। হুডা এখন দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির আর্জি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে রাজস্থান সরকারও রবার্টের বিরুদ্ধে বেআইনি জমি দখলের মামলায় সিবিআই তদন্ত করাতে চাইছে।a