তদন্তকারী দলের একমাত্র মহিলা পুলিশ অফিসার, ডিএসপি শ্বেতাম্বরী শর্মা
নিম্ন আদালতে কাঠুয়ায় শিশুকন্যাকে গণধর্ষণ ও খুনের মামলার বিচার চলছে। তারই মধ্যে নতুন বিতর্ক।
তদন্তকারী দলের একমাত্র মহিলা পুলিশ অফিসার, ডিএসপি শ্বেতাম্বরী শর্মা সম্পর্কে অভিযুক্তদের আইনজীবী অঙ্কুর শর্মার মন্তব্য, ‘‘উনি এক জন মহিলা। মাথায় কত আর বুদ্ধি থাকবে!’’ পাঁচ জন অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে ওই আইনজীবী শ্বেতাম্বরীকে এই ভাষাতেই বিদ্রুপ করেন। একটি শিশুকন্যাকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে চলা মামলার মহিলা তদন্তকারী অফিসার সম্পর্কে কোনও আইনজীবীর এই ধরনের মন্তব্য বিভিন্ন স্তরে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ওই পুলিশ অফিসার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘মহিলা বলেই কেউ যদি আমার বুদ্ধিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তা হলে আঘাত পেতে হয়। তবে আমি নয়, গোটা দেশ এর জবাব দেবে।’’ শ্বেতাম্বরী জানান, কাঠুয়ায় অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। প্রমাণ জোগাড় করতে আর সাক্ষ্য পেতে বেগ পেতে হচ্ছে তাঁদের।
তবে কাঠুয়া কাণ্ডে জম্মু-কাশ্মীরের আইনজীবীরা যে ভাবে বিচারের প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছেন, তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, কোনও ভাবেই বিচারের প্রক্রিয়া আটকানো যাবে না। জম্মু হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনও আজ শীর্ষ আদালতে জানিয়েছে, কাঠুয়ার আইনজীবীদের ওই অবস্থানকে তারা সমর্থন করে না।
কাঠুয়ার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার দাবি তুলে সেখানকার আইনজীবীদের সংগঠন আগেই পথে নেমেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, এই ঘটনায় সংখ্যালঘু ডোগরাদের নিশানা করা হচ্ছে। বিক্ষোভের জেরে নির্যাতিতার বাবা মামলা চণ্ডীগড়ে সরানোর আর্জি জানিয়েছিলেন। আজ সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে আপত্তি তোলে রাজ্য সরকার। তবে কাঠুয়া জেলা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ১২ এপ্রিলেই ধর্মঘট তুলে নিয়েছে তাঁরা।
স্থানীয় আইনজীবীদের থেকে বাধা আসায় ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নির্যাতিতা কিংবা অভিযুক্ত— কোনও পক্ষের আইনজীবীকেই মামলার কাজে আটকাতে পারে না বার অ্যাসোসিয়েশন। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চকে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তারা একটি প্রতিনিধি দলকে কাঠুয়ায় পাঠাচ্ছে।
আরও পড়ুন: শিশুমৃত্যু কাণ্ডে ফাঁসানো হচ্ছে, দাবি কাফিলের
আইনজীবীদের বাধার পাশাপাশি কাঠুয়ার ঘটনা নিয়ে যে ভাবে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীকে নিশানা করছে পড়ুয়ারা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মেহবুবা মুফতির সরকার। গত কালের সংঘর্ষের জেরে শ্রীনগর, পুলওয়ামা-সহ রাজ্যের ছ’টি জেলায় স্কুল কলেজ বন্ধ। রাজ্যের মন্ত্রী ও সরকারের মুখপাত্র নঈম আখতার আজ বলেন, ‘‘কাঠুয়ার ঘটনা কারা ঘটিয়েছে, তার সমাধান হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তরা হেফাজতে। মামলা এগোচ্ছে। তার মধ্যেই ঢিল ছোড়ার ঘটনা রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।’’
কাঠুয়া নিয়ে পথে না নেমে পড়ুয়াদের স্কুল-কলেজে ফেরার জন্য আর্জি জানিয়েছে মেহবুবা সরকার।