অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি ছিল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশযাত্রায় কোনও বাধা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে আপাতত গ্রেফতার করা যাবে না বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের লিখিত নির্দেশে আদতে এ বিষয়ে কিছু বলা নেই।
তৃণমূলের তরফে সুখেন্দুশেখর রায়ের অবশ্য যুক্তি, অনেক ক্ষেত্রেই আদালতে শুনানির সময়ে কোনও বিষয়ে দু’পক্ষ একমত হলে, তা আদালতের লিখিত নির্দেশে উল্লেখ করা হয় না। বিশেষত যখন পরবর্তী শুনানি কিছু দিন পরেই হবে বলে ঠিক হয়। এ ক্ষেত্রেও অভিষেককে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে, তাতে ইডি-র আপত্তি নেই বলে সলিসিটর জেনারেল মুখে জানিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ করা হবে না বলেও পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। লেখা না থাকলেও সেটাই নির্দেশ।
শনিবার রাতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকে বিদেশ যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়। মেনকাকে কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
তাঁর নামে লুকআউট নোটিসও জারি হয়। গত সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক বনাম ইডি-র মামলার পরে তৃণমূল বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, চিকিৎসার জন্য অভিষেকের বিদেশযাত্রায় কোনও বাধা থাকছে না।
সে দিনের শুনানির নির্দেশ এ বার প্রকাশ্যে এসেছে। প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ও বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চের নির্দেশে শুধু লেখা রয়েছে, দু’পক্ষের আর্জিতে ৩০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি হবে বলে ঠিক হয়েছে। অথচ এই শুনানির পরে তৃণমূলের দিল্লির দফতর থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল, প্রধান বিচারপতি ললিত তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, অভিষেকের বিদেশযাত্রায় কোনও বাধা থাকছে না। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারির মতো দমনমূলক পদক্ষেপও করা যাবে না।
ইডি কলকাতার বদলে দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানোয় অভিষেক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। গত মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট ইডি-কে কলকাতাতেই জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিল। ইডি সূত্রের বক্তব্য, অভিষেককে গ্রেফতার করা যাবে না— এমন কোনও নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দেয়নি। আগেও এমন নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ফলে সেই নির্দেশ বহাল থাকারও প্রশ্ন নেই।
৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে ইডি-র হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শুধু মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন, অভিষেক চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলে আপত্তি নেই। সে কথা উল্লেখ করেছেন সুখেন্দুশেখরও।