ফাইল চিত্র।
রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত আইনি লড়াই মেটাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিলেন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর। ভারতীয় বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে এমন নজির আর নেই বলে মত প্রবীণ আইনজীবীদের। প্রধান বিচারপতির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিশেষ উৎসাহী নয় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।
রাম মন্দির মামলার শুনানি দ্রুত শেষ করার আবেদন জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। আজ সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘বিষয়টি স্পর্শকাতর। এর সঙ্গে মানুষের আবেগ জড়িত। সংশ্লিষ্ট পক্ষের প্রতিনিধিরা আলোচনা করে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করতে পারেন।’’ প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘‘প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমি আলোচনায় বসতে পারি। সুপ্রিম কোর্টের অন্য বিচারপতিরাও আলোচনায় অংশ নিতে পারেন।’’
আরও পড়ুন: মন্ত্রী সিধুর শো নিয়ে ক্যাপ্টেনের চোখ আইনে
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিপুল জয়ের পরেই রাম মন্দির তৈরি নিয়ে চাপ বেড়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজেও রাম মন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। আজই অযোধ্যায় রামায়ণ সংগ্রহশালার জন্য ২৫ একর জমি দিয়েছে আদিত্যনাথ সরকার। প্রধান বিচারপতির প্রস্তাবকে আজ স্বাগত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, সব পক্ষের এখনই আলোচনায় বসা উচিত। রাজ্য সরকার সব ধরনের সাহায্য করতে তৈরি। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী মহেশ শর্মার কথায়, ‘‘জাতীয় স্বার্থেই সুপ্রিম কোর্ট এই প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সব সময়েই সাংবিধানিক পথে এই বিতর্ক মেটানোর পক্ষে। ’’
বিজেপি সূত্রের মতে, এই বিতর্ক মেটাতে বিশেষ আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কারণ রাম জন্মভূমি বিতর্ক মিটিয়ে ফেলতে পারলে মোদী ইতিহাসে ঠাঁই করে নিতে পারবেন বলেই ধারণা তাঁর ঘনিষ্ঠদের। সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বাবরি ধ্বংসের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত লালকৃষ্ণ আডবাণী।
তবে এক মাত্র নির্মোহী আখড়া ছাড়া মামলার কোনও পক্ষই এই প্রস্তাব মানার ইঙ্গিত দেয়নি। রাম লালার আইনজীবী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রীর মতে, ‘‘ইলাহাবাদ হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট জমি মামলার তিন পক্ষের মধ্যে ভাগ করার রায় দিয়েছিল। আমরা সেই রায় মানি নি। ফলে এখন আলোচনার প্রস্তাব মানার প্রশ্নই নেই। কোর্ট এ নিয়ে রায় না দিতে পারলে সরকারের উচিত অধ্যাদেশ আনা।’’ বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ কাসিম ইলিয়াসের বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কোনও ফল হয়নি।’’ কমিটির অন্য আহ্বায়ক জাফর-ইয়াব জিলানি অালোচনার বিপক্ষে নন। তাঁর মতে, ‘‘প্রধান বিচারপতি মধ্যস্থতা করলে সেই প্রক্রিয়ার বৈধতা থাকতে পারে।’’