সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
ঘৃণা-ভাষণের ক্ষেত্রে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ক্ষেত্রে মামলা দায়ের করতে দেরি হলে আদালত অবমাননা করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কংগ্রেসের কটাক্ষ, কোর্টের নির্দেশ মানলে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।
ঘৃণা-ভাষণ নিয়ে একগুচ্ছ আর্জি শুনছে সুপ্রিম কোর্ট। গত বছরে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড পুলিশকে এ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি কে এম জোসেফ ও বিচারপতি বি ভি নাগরত্নের বেঞ্চ। আজ সেই নির্দেশেরই পরিবর্তন করে সব রাজ্যকে এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেঞ্চ।
বিচারপতিরা বলেন, ‘‘ঘৃণা-ভাষণ গুরুতর অপরাধ। এতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোয় আঘাত লাগে। আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই, ধর্ম নির্বিশেষে ঘৃণা-ভাষণে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। তবেই সংবিধানের প্রস্তাবনায় বর্ণিতভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে রক্ষা করা সম্ভব।’’
এই মামলায় আবেদনকারীরা ঘৃণা-ভাষণের উপরে নজর রাখার জন্য প্রতি রাজ্যে এক জন নোডাল অফিসার নিয়োগের সুপারিশ করেছেন। বেঞ্চের প্রস্তাব, প্রতি জেলায় এক জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হোক। আবেদনকারীদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ঘৃণা-ভাষণ সরাতেও একটি প্রক্রিয়া তৈরি করা প্রয়োজন।
দিল্লি সংঘর্ষের আগে দেওয়া ঘৃণা-ভাষণের অভিযোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ও অন্য কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার আর্জি জানিয়েছিলেন কয়েক জন আবেদনকারী। বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে মামলার দায়েরের জন্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন বলে ম্যাজিস্ট্রেট মনে করেছেন। হাই কোর্টও সেই নির্দেশ বহাল রেখেছে। বিচারকেরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাঁরা কোনও দলের কথা মাথায় রাখেন না। কেবল সংবিধানের কথা ভেবে কাজ করেন।’’ ১২ মে ফের এই মামলার শুনানি হবে।
কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের বক্তব্য, ‘‘এই নির্দেশ মানলে প্রথম মামলা হবে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।’’