—ফাইল চিত্র।
বিহারের মুজফ্ফরপুর হোম-কাণ্ডে সিবিআইয়ের রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে নীতীশ সরকারের পদত্যাগী সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তথা জেডিইউ নেত্রী মঞ্জু বর্মা ও তাঁর স্বামী চন্দ্রশেখর বর্মার বাড়ি থেকে সিবিআই হানায় উদ্ধার হওয়া প্রচুর কার্তুজ সম্পর্কে বিহার পুলিশকে অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। হোমের প্রধান ব্রজেশ ঠাকুরের সঙ্গে চন্দ্রশেখর বর্মার সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নির্দেশে মঞ্জু বর্মাকে ইস্তফা দিতে হয়।
আজ বিচারপতি মদন বি লোকুর ও বিচারপতি দীপক গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই ‘উদ্বেগজনক’ ঘটনার সিবিআই তদন্তে সন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই দলই তদন্ত চালাবে। পটনা হাইকোর্ট তদন্তকারী দল পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত হওয়া তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানিয়ে সিবিআই ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে দু’টি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তার ভিত্তিতেই ডিভিশন বেঞ্চ বলে, প্রধান অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুর অত্যন্ত প্রভাবশালী। সে কারণেই ওই হোমের আশপাশের বাসিন্দারা ভয়ে কখনও অভিযোগ জানাতে পারেননি।
উল্লেখ্য, হোম-কাণ্ড সামনে আসার আগে মুজফ্ফরপুরের ওই হোম থেকে কয়েক জন মেয়েকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় সমাজকল্যাণ দফতর। সুপ্রিম কোর্ট সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে। সিবিআই রিপোর্টের ভিত্তিতে বিচারপতিদের ধারণা, সমাজকল্যাণ দফতর হোমে এই ধরণের কাজকর্মের কথা জানত। কেন হঠাৎই কিছু মেয়েকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল, সে সম্পর্কে বিহার সরকারের কাছ থেকেও হলফনামা চেয়েছেন তাঁরা। ওই দফতরের সংশ্লিষ্ট নথিপত্র আটক করার জন্য সিবিআইকে বলা হয়েছে।
সরকারের কাছ থেকে ওই হোমটি দশ বছরে মোট প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা পেয়েছিল বলে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে। ব্রজেশ ঠাকুরের আয়-ব্যয় নিয়ে আয়কর দফতরকেও তদন্তে সামিল করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মুখবন্ধ খামে তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে সিবিআইকে পরবর্তী স্ট্যাটাস রিপোর্ট দিতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
হোম-কাণ্ডের সংবাদ পরিবেশনের উপর পটনা হাইকোর্টের জারি করা নিষেধাজ্ঞা আজ খারিজ করে শীর্ষ আদালত। সংবাদমাধ্যমকে খবর পরিবেশনে সংযত থাকার অনুরোধও করেন বিচারপতিরা। তাঁদের বক্তব্য, সংবাদ পরিবেশন যেন ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ না হয়ে দাঁড়ায়। আজই দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গাঁধীর দাবি, দেশের ২০-৩০% ধর্ষণ হোমেই ঘটে। রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের সতর্ক নজর রাখতে বলেন তিনি।