বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ— ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের রাস্তা খুলে যেতেই শুরু হয়েছে নতুন সক্রিয়তা। মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির এলাকা থেকে শাহি ইদগা ও কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির চত্বর থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদ হটানোর দাবি উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে মথুরা ও কাশীর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড। ১৯৯১ সালের ‘উপাসনাস্থল সংক্রান্ত (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ওই দুই মুসলিম ধর্মস্থানের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিও তোলা হয়েছে।
ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জাকির ফারুকি বুধবার বলেন, ‘‘উপাসনাস্থল সংক্রান্ত আইনে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের পর কোনও কোনও ধর্মীয় স্থানের রূপান্তর ঘটানো যাবে না। তার আগেকার চরিত্র বজায় রাখতে হবে। ভারতে মসজিদগুলির উপর আগ্রাসন বন্ধ করতে এই আইনের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’’
গত ৯ নভেম্বরের রায়ে অযোধ্যার রামমন্দিরের জমির বদলে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একরের বিকল্প প্লট দেওয়ার কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ‘ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন’-এর প্রধান ফারুকি এ দিন বলেন, ‘‘বাবরি মসজিদের চেয়ে নয়া মসজিদটি আকারে বড় হবে।’’
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে অম্বালায় আরও তিনটি রাফাল, এপ্রিলে হাসিমারায়
১৯৯১ সালে পি ভি নরসিংহ রাওয়ের সরকার উপাসনাস্থল সংক্রান্ত আইন পাশ করেছিল। ওই আইনের ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, স্বাধীনতার দিন থেকে দেশে যে সব ধর্মীয় কাঠামো রয়েছে, তার চরিত্র কোনও ভাবেই পাল্টানো যাবে না। কোনও মন্দিরের জায়গায় যেমন মসজিদ বানানো যাবে না, তেমনই মসজিদ সরিয়ে মন্দিরও বানানো যাবে না। প্রায় তিন দশক আগে কার্যকর হওয়া ওই আইনের ৫ নম্বর ধারায় জানিয়ে দেওয়া হয়, আইনটি অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কারণ ওই আইনি লড়াই স্বাধীনতার আগে থেকেই চলছিল।
আরও পড়ুন: জঙ্গিদের অর্থের উৎস খুঁজতে কাশ্মীর, কর্নাটকে তল্লাশি এনআইএ-র
গত জুন মাসে বিশ্ব ভদ্র পূজারী পুরোহিত মহাসঙ্ঘ উপাসনাস্থল সংক্রান্ত আইনের ৪ নম্বর ধারাটি অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। সংগঠনের পক্ষে বলা হয়, স্বাধীনতার আগে যে সব হিন্দু মন্দির, মঠ জবরদখল হয়েছিল, ওই আইনের ফলে সেগুলির পুনরুদ্ধার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে ধারাটি প্রত্যাহার করা হোক। বস্তুত, রামমন্দির রায়ের পরেই একাধিক হিন্দু সংগঠন ‘অযোধ্যা তো ঝাঁকি হ্যায়, মথুরা-কাশী বাকি হ্যায়’ স্লোগানও তুলেছে। কিন্তু ৪ নম্বর ধারা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত মথুরা ও বারাণসী নিয়ে আইনি ভাবে এগোনো সমস্যার হবে বলেই মন্দির-পন্থীদের একাংশের আশঙ্কা।