নজরে চিন, কলকাতা-গুয়াহাটিতে সুখোই মহড়া

তেজপুরের ফ্লাইট কমান্ডার শোভিত মিশ্র জানান, প্রয়োজনে যাতে হলে দ্রুত অসামরিক বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করা যায়, তার প্রস্তুতি হিসেবেই এই প্রথম কলকাতা ও গুয়াহাটিতে সুখোই আনা হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০২:৪৭
Share:

সুখোইয়ের ককপিটে উঠছেন দুই পাইলট। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটি বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

উত্তর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্তের ও-পারে শক্তি বাড়াচ্ছে চিন। তাই যে-কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে এই প্রথম পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে অসামরিক বিমান ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানের মহড়া চালাল বায়ুসেনা। অসমের তেজপুর ঘাঁটি থেকে চারটি সুখোই-৩০ এমকেআই কলকাতা বিমানবন্দরে এবং দু’টি সুখোই গুয়াহাটি বিমানবন্দরে বুধ-বৃহস্পতিবার মহড়া দেয়।

Advertisement

তেজপুরের ফ্লাইট কমান্ডার শোভিত মিশ্র জানান, প্রয়োজনে যাতে হলে দ্রুত অসামরিক বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করা যায়, তার প্রস্তুতি হিসেবেই এই প্রথম কলকাতা ও গুয়াহাটিতে সুখোই আনা হল। অসামরিক বিমানবন্দরে অসামরিক এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বা এটিসি-র হাতে বিমান ওঠানামার নিয়ন্ত্রণ থাকে। রানওয়ে ও ট্যাক্সি বে এলাকার ভারও থাকে অসামরিক ব্যক্তিদের উপরে। যাত্রিবাহী বিমানের সঙ্গে যুদ্ধবিমানের উড়ানে অনেক ফারাক থাকে। তাই এ বারের মহড়ায় অসামরিক কর্মী, এটিসি-র সঙ্গে বায়ুসেনার বোঝাপড়াও দেখে নেওয়া হল।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় কলকাতা বিমানবন্দরকে বায়ুসেনার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হত। যুদ্ধবিমান এখান থেকে উড়ে বাংলাদেশে বোমা ফেলে ফিরে আসত। তার পরে এখান থেকে যুদ্ধবিমানের এমন তৎপরতা দেখেননি বিমানবন্দরের কর্মী-অফিসারেরা। শিলং থেকে বায়ুসেনার মুখপাত্র, উইং কমান্ডার রত্নাকর সিংহ বলেন, ‘‘অসামরিক বিমানবন্দর থেকে নিয়মিত যুদ্ধবিমান ওঠানামা করার প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। কোনও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাছের বায়ুসেনা ঘাঁটি বন্ধ হয়ে গেলে কলকাতার মতো অসামরিক বিমানবন্দরই ব্যবহার করতে হবে।’’ রত্নাকর জানান, অণ্ডাল বিমানবন্দরে হক বিমানও মহড়া চালাচ্ছে। কলকাতার আশেপাশে তুলনায় নীচ দিয়ে উড়ে বেড়িয়ে বিমানগুলি ফিরে আসছে। মহড়া শেষ করে আজ, শুক্রবারেই তাদের ফেরার কথা।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সেনাবাহিনীর একাংশের মতে, চিনের কথা ভেবেই পূর্ব ভারতে বায়ুসেনাকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বায়ুসেনার ঘাঁটিতে রাখা হচ্ছে অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান। প্রয়োজনে কলকাতার মতো অসামরিক বিমানবন্দরকে যাতে কাজে লাগানো যায়, তারও অনুশীলন শুরু হয়েছে।

গুয়াহাটি এয়ারফোর্স স্টেশনের প্রধান এয়ার কোমোডর শশাঙ্ক মিশ্র বলেন, ‘‘আমাদের উত্তর দিকের পড়শি রণসজ্জা বাড়িয়ে চলেছে। তাই আমাদেরও দক্ষতা, পরিকাঠামো ও প্রস্তুতি বাড়ানো প্রয়োজন।’’ তিনি জানান, যুদ্ধবিমান ওঠানামার জন্য উত্তর-পূর্বে আরও এয়ারস্ট্রিপের পুনরুজ্জীন ও পরিকাঠামো বিকাশের কাজ চলছে। এ বারের মহড়ায় পশ্চিমবঙ্গের অণ্ডাল ঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণ বিমান হক উড়িয়ে-নামিয়ে দেখে নেওয়া হচ্ছে। হাসিমারায় অবসর নিতে চলা মিগ স্কোয়াড্রনের বদলে শীঘ্রই নতুন বিমান আনা হবে। রাফাল এবং যুদ্ধ কপ্টার অ্যাপাচে বায়ুসেনার হাতে এলে উত্তর-পূর্বেও তাদের রাখা হবে। তেজপুর ও চাবুয়ায় মোতায়েন আছে সুখোইয়ের তিনটি স্কোয়াড্রন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement