তৃণমূল সাংসদ তথা রাজ্যসভায় দলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। ফাইল চিত্র।
জাতীয় দলের মর্যাদা ধরে রাখতে গত কাল মুখ্য নিবার্চন কমিশনার-সহ কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তৃণমূল সাংসদ তথা রাজ্যসভায় দলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। ৩০ মিনিট মুখ্য নিবার্চন কমিশনারের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশেই সুখেন্দুশেখরের ওই সাক্ষাৎ। সম্প্রতি ত্রিপুরায় নোটার চেয়েও কম ভোট পেয়েছে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে শুধু মেঘালয়ে পাঁচটি আসন পেয়েছে তারা। এর পরেই কমিশনের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কাছে নোটিস গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
জাতীয় দলের মর্যাদা নিয়ে তৃণমূল, সিপিআই ও এনসিপি-কে নোটিস দিয়েছিল কমিশন। জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তাদের জাতীয় দলের তকমা থাকবে? প্রত্যেক দলের প্রতিনিধিদের বক্তব্য শুনতে চেয়েছিল কমিশন। সেই কারণে সুখেন্দু কমিশনে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
ত্রিপুরা, মেঘালয়ের নির্বাচনের ফলাফলের পরে বঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, জাতীয় দল হিসাবে গণ্য হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলকে যে-শর্ত পূরণ করতে হয়, তৃণমূল তা করতে পারেনি। তাই জাতীয় দলের তকমা কেড়ে নেওয়ার দাবিতে কমিশনকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। চিঠিতে শুভেন্দু জানান, জাতীয় দল হতে হলে অন্তত তিনটি রাজ্য মিলিয়ে ২% আসন থাকতে হয়। যা তৃণমূলের নেই। পাশাপাশি, চারটি রাজ্যে ন্যূনতম ৬ শতাংশ ভোট পেলে জাতীয় দল হওয়া যায়। সেটাও তৃণমূলের নেই।
২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় দল হিসেবে তৃণমূলকে স্বীকৃতি দেয় কমিশন। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই তকমা দেওয়া হয়েছিল। ওই বছর পাঁচটি রাজ্যে ৬ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল ঘাসফুল শিবির। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মণিপুর, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড ও অসমেও ভোটে লড়েছিল তারা। সে বার পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের মধ্যে ৩৪টি পেয়েছিল তৃণমূল। তবে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূলের সেই তকমা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, বিধি অনুযায়ী ২০২৪ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ পর পর দু’টি লোকসভা ভোট পর্যন্ত তাদের তকমা অক্ষুণ্ণ থাকবে। এর পরেও শর্ত পূরণ না হলে তার পরবর্তী বিধানসভাগুলি পর্যন্ত চাইলে অপেক্ষা করতে পারে কমিশন। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের পরের বছরের বিধানসভাগুলিতেও যদি প্রার্থিত শর্ত পূরণ না হয়, তখন স্বীকৃতি হারানোর প্রশ্ন উঠবে। কাল এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার নয়াদিল্লিতে সব বিরোধী দলের বৈঠক ডেকেছেন। সূত্রের খবর, জাতীয় দলের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টার মোকাবিলা করতে যৌথ ভাবে পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হবে।