এক পা এগিয়ে দুই পা পিছোচ্ছেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
অর্থমন্ত্রীকে লাগাতার আক্রমণের পরেও স্বামী বুঝে গিয়েছিলেন যে অরুণ জেটলিকে তাঁর পদ থেকে কোনও ভাবেই সরাতে আগ্রহী নন নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই তিনি মোদীর বিরুদ্ধে পরোক্ষে আক্রমণ শুরু করেন। প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘অচ্ছে দিন’-এর দাবি নিয়েও। এ সব নিয়ে দলের মধ্যে শোরগোল পড়ে যাওয়ায় এখন পিছু হটছেন স্বামী। টুইটারে আজ তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের (যেখানে স্বামীকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন মোদী) পর অনেকে ভেবেছিলেন আমি ‘নমো’কে (নরেন্দ্র মোদী) আক্রমণ করব। তাঁরা ভুল। তার পর আমার টুইটারের বিকৃত ব্যাখ্যা শুরু করলেন। আবার ভুল!’’
স্বামী বোঝানোর চেষ্টা করেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘অচ্ছে দিন’ নিয়ে প্রশ্ন তোলার খবর আসলে তাঁর টুইটকে বিকৃত করা। কোনও ভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে তিনি আক্রমণ করেননি। কিন্তু দু’দিন আগেই স্বামী টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘আমি যদি ভারতের জিডিপির হিসেব বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সুদের হারের উপর স্যামুয়েলসন-স্বামীর ইনডেক্স নাম্বারের তত্ত্ব প্রয়োগ করি, তা হলে সংবাদমাধ্যম সেটাকে দল-বিরোধী কাজ বলে হইহই করে উঠবে।’’ নতুন পদ্ধতিতে দেশের জিডিপি গণনা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিতে করা জিডিপির হার নিয়েই গোটা বিশ্বে ‘অচ্ছে দিন’-এর প্রচার করছেন স্বয়ং মোদী। এটি নিছক অর্থ মন্ত্রক বা অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির বিষয় নয়।
স্বাভাবিক ভাবেই দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে স্বামীর এই টুইটকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেই আক্রমণ হিসেবে দেখা হয়েছে।
এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন ও পরে মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়ান ও আর্থিক বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাসকে আক্রমণ করায় স্বামীকে সতর্ক করা হয়। অরুণ জেটলি, রবিশঙ্কর প্রসাদরা প্রকাশ্যে স্বামীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। রাজনাথ সিংহ ও সঙ্ঘ থেকে বিজেপিতে আসা নেতা রাম মাধবও স্বামীকে মুখে লাগাম কষতে বলেন। অবশ্য শেষ কথাটি বলে দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। একটি টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারে স্বামীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা প্রচারের লোভে রাজনের মতো ব্যক্তিকে আক্রমণ করছেন, তাঁরা দেশের ভাল করছেন না। কেউ যদি নিজেকে ব্যবস্থার উপরে মনে করেন, তাঁদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।’’
প্রধানমন্ত্রীর ভর্ৎসনার পরে স্বামী অবশ্য নিজের উপরে রাশ টানার কথা বলেন। অনেক কম টুইট করার প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু রাশ টানার কথা বলেও বেলাগাম মন্তব্যে ইতি টানতে পারেননি তিনি। স্বামী অবশ্য শুরু থেকেই বলে আসছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেরুদণ্ড রয়েছে বলেই তিনি মনে করেন এবং এ জন্য সব সময়েই তাঁর পাশে রয়েছেন। তার পরেও তাঁর লাগামছাড়া মন্তব্য থামেনি। দল ফের তাঁকে সতর্ক করে। শেষ পর্যন্ত এক পা এগিয়ে এখন দু’পা পিছোতে হচ্ছে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীকে। আজ তিনি বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীকে তিনি আক্রমণ করেননি। সংবাদমাধ্যম তাঁর টুইটকে বিকৃত করেছে।