মরিয়া স্বামীর আক্রমণ এ বার খোদ মোদীকে

অরুণ জেটলির মন্ত্রিত্ব যাচ্ছে না জানামাত্র খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই আক্রমণ করতে শুরু করলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। বুধবার রাতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর দীর্ঘ বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য রদবদল নিয়ে আলোচনা হলেও জেটলিকে যে অর্থ মন্ত্রক থেকে সরানো হচ্ছে না তা মোটের উপর ঠিক হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৬ ০৪:২৫
Share:

অরুণ জেটলির মন্ত্রিত্ব যাচ্ছে না জানামাত্র খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই আক্রমণ করতে শুরু করলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। বুধবার রাতে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর দীর্ঘ বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য রদবদল নিয়ে আলোচনা হলেও জেটলিকে যে অর্থ মন্ত্রক থেকে সরানো হচ্ছে না তা মোটের উপর ঠিক হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার আনন্দবাজার পত্রিকায় সেই খবর প্রকাশিত হয়। আর সে দিনই সকালে স্বামী টুইট করে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রীর ‘অচ্ছে দিন’-এর দাবি নিয়ে।

Advertisement

স্বামী লিখেছেন, ‘‘আমি যদি ভারতের জিডিপি হিসেব বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সুদের হারের উপর স্যামুয়েলসন-স্বামীর ইনডেক্স নাম্বারের তত্ত্ব প্রয়োগ করি, তা হলে সংবাদমাধ্যম দল-বিরোধী কাজ বলে হইহই করে উঠবে।’’

নতুন যে পদ্ধতিতে এ দেশে জিডিপি গণনা করা হচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। অনেকেরই অভিযোগ, নতুন পদ্ধতিতে অনেকটাই বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে জিডিপি বৃদ্ধির হার। কিন্তু তাকে হাতিয়ার করেই ‘অচ্ছে দিন’-এর প্রচার করছে বিজেপি সরকার। এ বার তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাম্প্রতিক বিতর্কের আবহকে আরও তপ্ত করে তুললেন রাজ্যসভায় বিজেপির মনোনীত সাংসদ।

Advertisement

শাসক দলের সূত্র অবশ্য বলছে, জিডিপি নিয়ে তত্ত্বকথা আদৌ লক্ষ্য নয় স্বামীর। তিনি লড়াইটা শুরু করেছিলেন অর্থমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার লক্ষ্য নিয়ে। সেই কৌশলী লড়াইয়ের প্রথম ধাপ হিসেবে তিনি আক্রমণের নিশানা করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজনকে। রাজন গভর্নর পদে আর থাকবেন না বলে ঘোষণা করে দেওয়ার পরে স্বামী নিশানা করেন কেন্দ্রের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়ান ও আর্থিক বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাসকে। তা নিয়ে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে সরাসরি সংঘাত বাধে স্বামীর। প্রধানমন্ত্রীর কাছে জেটলিকে সরানোর দাবি তোলেন তিনি। দলের অন্দরে স্বামী দাবি করেন, অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব পেলে দু’মাসে অর্থনীতির ভোল পাল্টে দেবেন তিনি।

মোদী কিন্তু জেটলির পাশেই দাঁড়িয়েছেন। প্রথমে একটি নিউজ চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বামীর নাম না-করে তাঁকে তিরস্কার করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘যাঁরা প্রচারের লোভে রাজনের মতো লোককে আক্রমণ করছেন, তাঁরা দেশের ভাল করছেন না।’ তার পরই এল জেটলিকে না-সরানোর সিদ্ধান্ত।

অর্থ মন্ত্রক আপাতত হাতে আসছে না বুঝেই স্বামী এ বার মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর। গত কাল জেটলিকে ‘অনির্বাচিত কুকুর’ বলে খোঁচা দিয়ে টুইট করেছিলেন তিনি। আর আজ আক্রমণ খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই। প্রশ্ন হল— স্বামী যখন দলের লোকেদেরই নিশানা করছেন, এমনকী প্রধানমন্ত্রীকেও, তখন তাঁকে সহ্য করা হচ্ছে কেন? বিজেপি সূত্র বলছে, স্বামী আসলে আরএসএস-এর স্নেহধন্য। সঙ্ঘের সুপারিশেই তাঁকে মনোনীত সাংসদ হিসেবে রাজ্যসভায় আনা হয়েছে। এখন তাঁকে থামাতে গেলে সঙ্ঘকেই সক্রিয় হতে হবে। বস্তুত বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের একটা অংশ চাইছে, অবিলম্বে স্বামীকে সতর্ক করে বিবৃতি দিক সঙ্ঘ।

কিন্তু সেটা যদি হয়ও, তা হলেও কি থামবেন স্বামী? রাজনীতিতে তাঁর ইতিহাস তেমন আশ্বাস দিচ্ছে না। গত চার দশক ধরে বারেবারেই তিনি ঝড় তুলেছেন। তা সে বিরোধী দলেই হোক, বা নিজের দলে। স্বামী-ঝড়ে গাঁধী পরিবারকে কাবু করার

আশায় ছিলেন মোদী। উল্টে এখন নিজেই ফ্যাসাদে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement