স্কুলের বন্ধ দরজায় এ ভাবেই প্রায় দু’ঘণ্টা আটকে ছিল শিশুটির মাথা।
স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ার পরেও ঘরে ফেরেনি বাড়ির একরত্তিটা। তাকে খুঁজতে খুঁজতে স্কুলে গিয়ে মামার চক্ষু চড়কগাছ!
তিনি দেখতে পান, স্কুলের বন্ধ দরজার ভিতরে রয়েছে শিশুটির মাথা। সেই অংশটা অবশ্য বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে না। আর শরীরের বাকি অংশটা রয়েছে বন্ধ দরজার বাইরে।
শনিবার দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটেছে আগরা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে ধোবাই গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে। এর পরেই বিতর্কের মুখে পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ‘ডেড উড’ বলে দুই আইপিএস অফিসারকে ভিআরএস ছত্তীসগঢ়ে
পুলিশ জানিয়েছে, বছর আটেকের ওই শিশুটির নাম সাক্ষী। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুপুর একটায় স্কুল ছুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছুটির পরেও সাক্ষী বাড়ি না ফেরায় তাকে খুঁজতে শুরু করেন বাড়ির লোকেরা। তার মামা দশরথ সিংহ স্কুলে পৌঁছে ভয়াবহ ওই দৃশ্য দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করতে থাকে।
সিনিয়র সাব ইনস্পেক্টর রাজেশ তোমর জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য ফোন করা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তারান্নুমকে। তিনি ফোন ধরেননি। উপায়ান্তর না দেখে দরজা ভাঙতে বাধ্য হয় পুলিশ। দু’ঘণ্টা ওই অবস্থায় আটকে থাকার পরে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সাক্ষীকে।
কিন্তু কী ভাবে শিশুটির ও রকম অবস্থা হলো?
অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, সাক্ষীকে ‘শাস্তি’ দিয়ে ক্লাস ঘরেই আটকে দিয়েছিলেন এক শিক্ষক। ওই ঘর থেকে বেরিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল ওই খুদে। তাতেই ক্লাসঘরের দরজার ফাঁকে মাথা আটকে যায়। সাহায্যের জন্য প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চিৎকার করেছিল সে। তার পরেই জ্ঞান হারায় সাক্ষী।
এই ঘটনার পরেই শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিকারি অর্চনা গুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি জবাব দেননি। তবে বিতর্কের মুখে প্রধান শিক্ষিকা ও আর এক শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছে শিক্ষা দফতর।