এ বার বারাণসী

গলা তুলে জুটল চড়, শিক্ষাঙ্গনে নজরবন্দি পড়ুয়ারা

মুখ খুললেই মার! এ ব্যাপারে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যাদবপুর বা বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের যে তফাত নেই, তা ফের প্রমাণ হল! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সাম্মানিক ডক্টরেট দিতে চেয়েছিল বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ)।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৫৩
Share:

মুখ খুললেই মার! এ ব্যাপারে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যাদবপুর বা বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের যে তফাত নেই, তা ফের প্রমাণ হল!

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সাম্মানিক ডক্টরেট দিতে চেয়েছিল বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ)। তা নিতে অস্বীকার করে মোদী আজ জানান, এ সব থেকে দূরে থাকতে চান, বিএইচইউয়ে আসতে পেরেই তিনি গর্বিত। যদিও সেই সভাতেই ছাত্রদের অধিকার নিয়ে সরব হয়ে মোদীর সামনেই চড় খেতে হল বিএইচইউয়ের এক ছাত্রকে। আর সেই বিএইচইউয়ে গিয়েই এবিভিপির চোখরাঙানি সহ্য করতে হল যাদবপুরের এক দল খেলোয়াড়কে।

সোমবার তখন মঞ্চ থেকে নামার জন্য সবে পা বাড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দর্শকাসন থেকে চিৎকার করে ওঠেন বিএইচইউয়ের এক পড়ুয়া— ‘‘মোদীজি, দয়া করে ছাত্রদের কথা শুনুন।’’ ছুটে আসে পুলিশ। টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় আশুতোষ সিংহ নামে ছাত্রটিকে। আশুতোষ বলতেই থাকেন, ‘‘ছাত্রদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এখানে কোনও বিষয়ে সরব হওয়ার অধিকার নেই।’’ ১৯৯৭ সালে গোলমালের জেরে তুলে দেওয়া হয় বিএইচইউয়ের ছাত্র সংগঠন। ২০০৮-এ ছাত্র কাউন্সিল তৈরি হলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ঠিকঠাক ছাত্র সংগঠন তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে একটি স্মারকলিপি দেওয়ার ইচ্ছের কথাও জানান আশুতোষ। সেই সময়ই পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। বেমক্কা চড় কষিয়ে দেন আশুতোষের গালে। সূত্র বলছে, ওই ব্যক্তি বিজেপি-কর্মী।

Advertisement


বারাণসীতে শ্রী গুরু রবিদাস জন্মস্থান মন্দিরের
লঙ্গরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার পিটিআইয়ের ছবি।

দ্বিতীয় ঘটনাটিও বিএইচইউয়েরই। ভিন‌্‌রাজ্যে গিয়ে এবিভিপি-র চোখরাঙানির মুখে পড়েন যাদবপুরের এক দল পড়ুয়া। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে গত সপ্তাহে বিএইচইউ যান যাদবপুরের ১১ পড়ুয়া। যাদবপুর সূত্রের খবর, বিএইচইউ-তে পৌঁছনোর পরেই ওই খেলোয়াড়দের উপর নজরদারি শুরু করে এবিভিপি। জেএনইউ-কাণ্ডের প্রতিবাদে সম্প্রতি যাদবপুরের কিছু পড়ুয়া মিছিল করেন। কাশ্মীর প্রসঙ্গে কিছু স্লোগানও ওঠে। তার সূত্র ধরেই যাদবপুরের খেলোয়াড়দের নজরবন্দি করা হয় বলে অভিযোগ। ওই খেলোয়াড়রা কোন বিভাগের, সেই মিছিলে তাঁরা ছিলেন কি না— খোঁজ নেন এবিভিপি সমর্থকেরা। তাঁদের ঘরের পাশে, এমনকী খাওয়ার জায়গাতেও তাঁদের অনুসরণ করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের স্পোর্টস দলের ম্যানেজার দীপ পাল ছাত্রদের নির্দেশ দেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় লেখা জার্সি পরে বাইরে না বেরোতে।

বিএইচইউ কর্তৃপক্ষকে কেন জানানো হল না? যাদবপুরের ‘ডিরেক্টর অব ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাকটর’ অপরূপ কোনার বলেন, ‘‘বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও ঠিক ভরসা করে উঠতে পারেননি পড়ুয়ারা।’’ বিষয়টি নিয়ে স্পোর্টস ম্যানেজারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement