প্রতীকী ছবি।
ছাত্রীকে অন্তর্বাস খুলে মেডিক্যালের অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে বাধ্য করানোর খবর সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশ জুড়ে। কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে কেরলের কুন্নুর জেলার টিস্ক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের চার শিক্ষককে বহিষ্কার করলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই গত রবিবার পরীক্ষার্থীদের অন্তর্বাস খুলিয়ে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল।
বহু টালবাহানার পর ডাক্তারির অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সেই পরীক্ষা ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। পরীক্ষায় কারচুপি রুখতে পড়ুয়াদের পোশাকের উপর কিছু নিয়ম ধার্য করা হয়েছিল। তা রক্ষা করতেই পরীক্ষার আগে অন্তর্বাস পর্যন্ত খুলতে হয়েছে এক ছাত্রীকে। একই সঙ্গে এক ছাত্রীকে তাঁর জিনসের প্যান্টের ধাতব বোতাম কেটে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করারও অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় বসার জন্য খুলতে হল অন্তর্বাস!
সোমবারই এই গুরুতর অভিযোগ তোলেন এক ছাত্রীর মা। জানান, পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় তাঁর মেয়েকে ব্রা খুলতে বাধ্য করা হয়। ব্রায়ে ধাতব হুক থাকার কারণেই বিপত্তি। নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা ছিল, মেটাল ডিটেক্টর যদি আওয়াজ করে তবে কাউকে যেন পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া হয়। সেইমতো ওই ছাত্রীকে আটকানো হয়। জানা যায়, তার অন্তর্বাসের হুকটি ধাতব। ছাত্রীটির মা দাবি করেন, সাধারণ যে কোনও অন্তর্বাসে প্লাস্টিকের হুক থাকে। কিন্তু একটু দামি পোশাকের ক্ষেত্রে ধাতব হুকই দস্তুর। সে ক্ষেত্রে ওই ছাত্রীকে ছাড় দেওয়া যেত বলে মনে করছেন তিনি। কিন্তু নির্দেশিকা হুবহু মেনে কেরলের একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ ছাত্রীটিকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাধা দেন। শেষমেশ অন্তর্বাস খুলে তবে পরীক্ষায় বসতে পারে সে।
পরীক্ষায় বসার জন্য জারি করা পোশাক বিধির কোথাও উল্লেখ ছিল না যে ব্রা পরা যাবে না। তবে কেন ওই ছাত্রীকে ব্রা খুলতে বাধ্য করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও যে স্কুলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে এমন হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের, সেখানকার অধ্যক্ষ জালাউদ্দিন শেখ সোমবার বলেছিলেন, ‘‘স্কুলের পক্ষ থেকে আগেই কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে কোনও ধাতব জিনিস নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকা যাবে না।’’ কিন্তু প্রশাসনের চাপের মুখে পড়ে যে সব শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের পোশাক খুলতে বাধ্য করিয়েছিলেন, তাঁদের শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। একদিকে নিয়মের গেরো, অন্য দিকে মানবিকতা— এ দু’য়ের মাঝেই জমছিল বিস্তর বিতর্ক। এ নিয়েই মঙ্গলবার সরব হয়েছেন কংগ্রেস মুখপাত্র খুশবু সুন্দর। তাঁর দাবি, ‘‘যে ভাবে পরীক্ষার আগে ছাত্রছাত্রীদের প্রায় নগ্ন করা হচ্ছে তা রীতিমতো মর্যাদাহানিকর। পড়ুয়াদের সম্ভ্রমই কেড়ে নিচ্ছে নিট।’’