জওয়ানদের করা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে সেনাপ্রধানের অবস্থান ক্রমশ কঠোর হচ্ছে। রবিবার সেনা দিবসের অনুষ্ঠানে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে সে কথা। ছবি: পিটিআই।
অভিযোগ তুলে ধরার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করলে এ বার শাস্তির মুখে পড়তে হবে সেনাবাহিনীর কর্মীদের। স্পষ্ট সতর্কবার্তা সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের। রবিবার সেনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিজের ভাষণে জেনারেল রাওয়াত এই সতর্কবার্তা জারি করেছেন। অভাব-অভিযোগ জানানোর যে নিজস্ব প্রক্রিয়া সেনাবাহিনীতে রয়েছে, সেনাপ্রধান প্রত্যেককে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে আধিকারিকরা অধস্তনদের দিয়ে কিছু ব্যক্তিগত কাজ করিয়ে নেন বলে যে অভিযোগ সম্প্রতি উঠেছে, তাকে গুরুত্ব না দিয়ে জেনারেল জানিয়েছেন, এটি কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। আধিকারিকদের এক জন করে ‘সহায়ক’ রাখার প্রথা একটি স্বাভাবিক বিষয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
দেখুন জওয়ানদের অভিযোগের ভিডিও:
দেশের সশস্ত্র বাহিনীতে জওয়ানদের জন্য খাওয়া-দাওয়া এবং কাজের প্রকৃতি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই প্রবল হইচই চলছে। প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএসএফ জওয়ান তেজবাহাদুর যাদবের পোস্ট, তার পর সিআরপিএফ জওয়ান জিৎ সিংহের পোস্ট, সব শেষে সেনা জওয়ান যজ্ঞপ্রতাপ সিংহের পোস্ট— পর পর তিন অভিযোগের ধাক্কায় সরগরম দেশের সশস্ত্র বাহিনীর অন্দরমহল। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত নিজেই সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, অভিযোগ থাকলে সরাসরি তাঁকে জানাতে, নাম গোপন থাকবে। আজ সেনা দিবসে জেনারেল রাওয়াত সে প্রসঙ্গে ফের মুখ খুলেছেন। তবে এ দিন তাঁর কণ্ঠস্বর আগের চেয়ে কঠিন। জেনারেলের সতর্কবার্তা, ‘‘কয়েক জন সহকর্মী তাঁদের কিছু অভিযোগের প্রতি মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করছেন। এতে জওয়ানদের মনোবলের ক্ষতি হচ্ছে তথা গোটা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ... এই ধরনের কার্যকলাপের জন্য কিন্তু আপনি অপরাধী হিসেবে গণ্য হতে পারেন এবং আপনার শাস্তি হতে পারে।’’ কোনও অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর যে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা বাহিনীতে রয়েছে, সেই ব্যবস্থার সাহায্য নিন জওয়ানরা, পরামর্শ সেনাপ্রধানের। তার সঙ্গেই জেনারেল রাওয়াত এ দিন ফের জানিয়েছেন, কেউ চাইলে সরাসরি তাঁর কাছেই অভিযোগ জানাতে পারেন।
আরও পড়ুন: সেনায় শুরু ভিডিও লড়াই
সেনা জওয়ান যজ্ঞপ্রতাপ সিংহ অভিযোগ করেছেন, ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা জওয়ানদের দিয়ে জুতো পালিশ করান, জামাকাপড় কাচান এবং আরও অনেক ব্যক্তিগত কাজ করিয়ে নেন। এই অভিযোগকে যে তিনি কোনও গুরুত্বই দিচ্ছেন না, তা সেনাপ্রধান এ দিন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, সেনাবাহিনীতে ‘সহায়ক’ প্রথা চিরকালই রয়েছে। কোনও না কোনও জওয়ান আধিকারিকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করেন, এতে আপত্তিকর কিছু নেই। সেনাপ্রধানের কথায়, ‘‘সহায়করা আধিকারিকদের খেয়াল রাখেন। আধিকারিকরাও সহায়কদের খেয়াল রাখেন।’’