বিক্ষোভকারীদের পেটাচ্ছে পুলিশ। তুতিকোরিনে। -ফাইল চিত্র।
পর পর দু’দিন পুলিশের গুলিতে ১৩ জন বিক্ষোভকারীর প্রাণ যাওয়ার পরে বন্ধ হয়ে গেল থুদুকুরির (তুতিকোরিন) বিতর্কিত স্টারলাইট কপার কারখানা। তামিলনা়ড়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এই নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেই কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে।
স্টারলাইট কারখানাটি দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ করছে না বলে প্রশ্ন তুলেছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তবে বেদান্ত লিমিটেডের পক্ষ থেকে পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আর্জি জানানো হয়। এর পরেই ১৮ ও ১৯ মে পর্ষদের আধিকারিকেরা তুতিকোরিনের কারখানাটি সরেজমিনে ঘুরে দেখেছেন। তবে কালই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান বিতর্কিত সংস্থাটি বন্ধের নির্দেশে সই করতে গিয়ে যে কারণ দেখিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে, কারখানায় পৌঁছে দেখা গিয়েছে, উৎপাদন চালু করতে বেশ কিছু কাজ করে চলেছে কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে ১৯৭৪ সালের জলদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন ও ১৯৭১-এর বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইনের বিভিন্ন ধারায় কারখানা বন্ধ ও বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার কথা জানিয়েছে পর্ষদ।
স্টারলাইট কপার বন্ধের দাবি নিয়ে জমায়েতে পুলিশ গুলি চালানোয় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। রাজ্যের বিরোধী নেতা এম কে স্ট্যালিন, ভাইকো কিংবা কমল হাসনের বিরুদ্ধে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করার জন্য মামলা করেছে রাজ্য। তবে ডিএমকে বিধায়কদের সঙ্গে নিয়েই আজ সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্ট্যালিন। ই পলানীস্বামী সরকারের ইস্তফার দাবি তোলেন। তাঁকে জোর করে সরিয়ে দেয় নিরাপত্তারক্ষীরা। বিধানসভার কাজ ঠিক করার বৈঠকটিও বয়কট করেছে ডিএমকে।
কাল সন্ধে থেকেই তুতিকোরিন ও আশপাশের জেলাগুলিতে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করেছিল প্রশাসন। তবে আজও শহরের কয়েকটি জায়গায় গন্ডগোল হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা একটি দেশি মদের দোকানে ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার পিছনে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ‘বিরোধীদের প্ররোচনা ও সমাজ বিরোধীদের চক্রান্ত’কেই দায়ী করেছেন। চাপের মুখে পলানীস্বামীর দাবি, ২০১৩ সালে জয়ললিতা সরকার স্টারলাইট কারখানা বন্ধে পদক্ষেপ করেছিল।
আরও পড়ুন: ছাঁট মাফিয়ারাই খুনের পিছনে, নিশ্চিত পুলিশ
স্টারলাইট-বিরোধী আন্দোলনের পিছনে বিদেশি শক্তির হাত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন সংস্থার কর্তা অনিল অগ্রবাল। এ মাসের শুরুতে তিনি এমন মন্তব্য করলেও গুলি চালানোর ঘটনায় বেদান্তের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিএসই দাবি করেছে, পরিবেশের কারণে মহারাষ্ট্র, গোয়া ও গুজরাত বাতিল করার পরেই তুতিকোরিনে কারখানা গড়তে পেরেছে স্টারলাইট।