তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন (বাঁ দিকে), রাজ্যপাল আরএন রবি (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
রাজ্য বনাম রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব প্রায় প্রতি দিনই নতুন নতুন উচ্চতা ছুঁয়ে ফেলছে। দক্ষিণের তিন রাজ্য, কেরল, তেলঙ্গানা এবং তামিলনাড়ুতে রাজ্যপালকে নিয়ে শাসকদলের মনোভাব চরমে। এই প্রেক্ষিতেই তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবিকে এখনই বরখাস্ত করার আবেদন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে স্মারকলিপি জমা দিল সেই রাজ্যের শাসকদল ডিএমকে। রাজ্যপালকে সার্বিক শান্তির পক্ষে সবচেয়ে বড় বিপদ বলেও অভিহিত করেছে এমকে স্ট্যালিনের দল।
স্মারকলিপিতে ডিএমকের অভিযোগ, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারকে মানুষের সেবা করতে বাধা দিচ্ছেন রাজ্যপাল রবি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভাঙার মতো গুরুতর অভিযোগও করেছে ডিএমকে। রাষ্ট্রপতির কাছে ডিএমকের দরবার, সংবিধানকে রক্ষা করার শপথ নিয়ে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল ধারাবাহিক ভাবে উল্টো কাজ করে চলেছেন। বিধানসভা যে বিলগুলো পাশ করাচ্ছে, তা-ও আটকে থাকছে স্রেফ রাজ্যপালের কারণে। ডিএমকে স্মারকলিপিতে আরও দাবি করেছে, রাজ্যপাল রবির বক্তব্য কখনও কখনও দেশদ্রোহিতার আওতায় পড়ে যাচ্ছে। তাঁকে এই সাংবিধানিক পদের অযোগ্য বলেও মনে করে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিনের দল। তাই তাঁর দ্রুত অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি জমা পড়ে গেল। যদিও স্মারকলিপির ‘বিস্ফোরক’ বয়ান নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, এ মাসের গোড়ায় ডিএমকে সমমনস্ক সাংসদদের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছিল, যেন তাঁরা রাজ্যপাল রবির অপসারণের আওয়াজ একযোগে তোলেন। গত কিছু দিন ধরেই রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব চলছে দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুতে। নির্বাচিত সরকারের অভিযোগ, রাজ্যপাল নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে স্ট্যালিনের সরকারের বিরোধিতা করে চলেছেন। বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিল আটকে আছে কেবল তাঁর সইয়ের অপেক্ষায়। এর পিছনে রয়েছে কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলন। রাজ্যপাল কেন্দ্রের হাতের পুতুল হিসাবে কাজ করছেন বলেও মনে করছে ডিএমকে।
তবে একা ডিএমকে-ই নয়, দক্ষিণের আরও দুই রাজ্যে রাজ্যপালকে নিয়ে বিবাদ চরমে উঠেছে। বামশাসিত কেরলে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের বিরুদ্ধে যেমন পিনারাই সরকারের আপত্তি বাড়ছে, তেমনই তেলঙ্গানার রাজ্যপালকে নিয়েও ক্রমান্বয়ে অসন্তোষ বাড়ছে সেই রাজ্যের কেসিআর সরকারের। ঘটনাচক্রে, ক’দিন আগেই ডিএমকের মুখপত্রে নজিরবিহীন ভাবে তেলঙ্গানার রাজ্যপালকে আক্রমণ করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে রাজ্যপাল পদ নিয়ে দক্ষিণে ক্রমেই বাড়ছে ক্ষোভ।