পার্সেল বহনের বাজার ধরতে ইতিমধ্যেই ডাক বিভাগের হাত ধরার পরিকল্পনা করেছে রেল। ফাইল চিত্র।
পণ্য পরিবহণ রেলের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। অথচ পার্সেল বহনে তাদের সাফল্য এখনও তত উজ্জ্বল নয়। এই অবস্থায় সেমি হাইস্পিড ট্রেন বন্দে ভারতের পরে এ বার পণ্যবাহী পার্সেল ট্রেনেরও গতি বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে রেল। ঘণ্টায় সর্বাধিক ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে সমর্থ ওই রেক ব্যবহার করে রেলের পার্সেল ট্রেন পরিষেবাকে আরও আকর্ষক করে তোলাই তাদের এই নতুন পরিকল্পনার উদ্দেশ্য।
দেশে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার পার্সেল বহনের ব্যবসার বেশির ভাগটাই এখন আসে ই-কমার্স সংস্থার কাছ থেকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই সব পণ্যের বেশির ভাগই সড়কপথে পরিবহণ করা হয়। রেল এখন সারা দেশের মোট অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহণের মাত্র ২৮ শতাংশের বরাত পায়। ২০৩০ সালের মধ্যে ওই হার অন্তত ৪০ শতাংশ এবং তার পরের ধাপে ‘ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর’ ব্যবহার করে ওই হার ৫০ শতাংশে নিয়ে যাওয়াই রেলের লক্ষ্য।
রেল সূত্রের খবর, ওই লক্ষ্য মাথায় রেখেই চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে ১৬ কোচের বিশেষ পার্সেল ট্রেন তৈরির উদ্যোগ চলছে। ইএমইউ ট্রেনের মতো ১৬ কামরার ওই ট্রেন ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ধাঁচে নির্মিত ওই পার্সেল ট্রেনের রেকও আসলে ট্রেন-সেট। বাইরে থেকে ইঞ্জিন দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার বদলে সে নিজেই ছোটে।
বিশেষ ধরনের ওই রেক তৈরিতে গড়ে ৬০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ পড়বে বলে জানিয়েছেন রেলকর্তারা। বাস্তবে ওই খরচের তিন ভাগের এক ভাগ খরচ করে ৪৫টি চালু ওয়াগন তৈরি করে ফেলা সম্ভব। চলতি বছরের ডিসেম্বরে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহারের জন্য ‘প্রোটোটাইপ’ বা নমুনা রেক তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা। সেই রেক অনুমোদন পেলে পরের ধাপে মাসে একটি রেক তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হবে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে এই ধরনের ২৫টি রেক তৈরি করার লক্ষ্য ধার্য হয়েছে। দেশের মেট্রো শহর-সহ বড় শহরগুলিকে পার্সেল পরিষেবায় যুক্ত করতেই এই উদ্যোগ। ফল, আনাজ, দুগ্ধজাত সামগ্রীর মতো পচনশীল পণ্য পরিবহণের জন্য ওই রেকে দু’টি করে বিশেষ রেফ্রিজারেটেড বা হিমায়িত কোচ রাখার কথা ভাবা হয়েছে।
পার্সেল বহনের বাজার ধরতে ইতিমধ্যেই ডাক বিভাগের হাত ধরার পরিকল্পনা করেছে রেল। এর ফলে রেল স্টেশনে না-গিয়ে সরাসরি আঞ্চলিক ডাকঘর থেকেই পণ্য ‘বুক’ করা যাবে। নতুন রেক চালু হলে সড়কপথে যে-কোনও পণ্য পৌঁছতে যে-সময় লাগে, তার চেয়ে অনেক কম সময়ে গন্তব্যে পণ্য পৌঁছে দেবে রেল।