Mamata Banerjee

Mamata-Sonia: উষ্ণতার ছোঁয়া না নিয়মরক্ষা, চর্চায় মমতার শুভেচ্ছাপত্র

গত বছরে এই দিনে টুইট করেছিলেন মমতা। তার আগে কখনও টুইট করেছেন, এক বার সনিয়ার বাড়িতেও গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩৭
Share:

ফাইল চিত্র।

ফুল নয়, ফোনালাপ নয়, টুইট নয়। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর জন্মদিনে শুভেচ্ছাপত্র পাঠালেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পর্ক এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে আজ সকাল থেকেই আগ্রহ ছিল, সনিয়ার জন্মদিনে মমতা কতটা উষ্ণতা দেখান, তা নিয়ে। দিনশেষে রাজনৈতিক মহলে অনেকেরই মন্তব্য, দূরত্ব বজায় রেখে ‘নিয়মরক্ষাই’ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “রাজনীতির পথ যাঁর যা-ই হোক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সনিয়া গাঁধীর সম্পর্ক সৌহার্দ্যের। পারস্পরিক শ্রদ্ধা রয়েছে। আজ তৃণমূল নেত্রীর পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তা সেই কথাই বলছে।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, একটি চিঠি না পাঠিয়ে অন্য সবার মতো প্রকাশ্যে টুইট করলেন না কেন মমতা? গত কয়েক বছর তো তা-ই করে এসেছেন? জবাবে সুখেন্দুশেখর বলেন, “টুইট বিষয়টি বড়ই যান্ত্রিক। চিঠির মধ্যে ব্যক্তিগত ছোঁওয়া এবং উষ্ণতা থাকে।”

প্রসঙ্গত, গত বছরে এই দিনে টুইট করেছিলেন মমতা। তার আগে কখনও টুইট করেছেন, এক বার সনিয়ার বাড়িতেও গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মমতা।

Advertisement

পাঁচ মাস আগে দিল্লিতে এসে ১০, জনপথে গিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মমতা। তারপর আর সে ভাবে যোগায‌োগ হয়নি। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক মঞ্চে কংগ্রেসকে আক্রমণ করছেন মমতা এবং তাঁর দল। গোয়া, মেঘালয়ের মতো রাজ্যে তিনি যুদ্ধের পতাকা উড়িয়েছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। চলতি শীতকালীন অধিবেশনেও প্রতি দিনই কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধ স্পষ্টভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূলের সাংসদেরা। রাজ্যসভার বিভিন্ন দলের ১২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা নিয়ে সব বিরোধী দল একসঙ্গে গাঁধীমূর্তির সামনে ধর্না দিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু প্রতি দিনের মতো আজও কংগ্রেসকে বিদ্ধ করে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতারা বলছেন, ধর্নার পরিকল্পনাটি তাঁদের হলেও কংগ্রেস তার কৃতিত্ব ‘হাইজ্যাক’ করে নিতে চাইছে। প্রায় সমস্ত বিরোধী দল প্রতি দিন সকালে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে গিয়ে বিরোধী কৌশল স্থির করলেও, তৃণমূল চলছে নিজের মতো।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সনিয়ার জন্মদিনে মমতার ‘নিঃশব্দ শুভেচ্ছার’ বিষয়টিকে বিশেষ ভাবে দেখা হচ্ছে। অথচ বর্তমান রাজনৈতিক মতভেদ বা জোট নেতৃত্বের দাবির বিষয়টি ছেড়ে দিলেও, গাঁধী পরিবারের সঙ্গে মমতার নৈকট্য বহু পুরনো। বহু বার বিভিন্ন প্রসঙ্গে ‘রাজীবজি’-র স্নেহ প্রসঙ্গে তাঁকে সরব হতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু রাজীব-পুত্রের প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের ‘অ্যালার্জি’ ক্রমশ প্রকট হয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। আজ তৃণমূল নেত্রীর তরফে সনিয়াকে শুধু চিঠি পাঠানোর বিষয়টিকে তাই কেউ কেউ দূরত্বের প্রতীক হিসেবেই দেখতে চাইছেন।

কপ্টার দুর্ঘটনা এবং সিডিএস বিপিন রাওয়তের মৃত্যুর জেরে জন্মদিনের উদযাপন বাতিল করেছেন কংগ্রেস নেত্রী। তবে দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সকালেই টুইট করেন, ‘সনিয়া গাঁধীজীকে তাঁর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাই। তাঁর দীর্ঘ জীবন এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করি।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সনিয়াকে টুইটে শুভেচ্ছা জানান। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, ‘আমাদের সিডিএস-এর মৃত্যুর কারণে সনিয়া গাঁধী তাঁর জন্মদিন উদ্‌যাপন বাতিল করেছেন। এই সিদ্ধান্তই দেশের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা এবং তাঁর পরিণত মনকে তুলে ধরে। যাকে আমি সম্মান করি।’

শরিক নেতার কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা পেলেও গুলাম নবি আজাদ অথবা কপিল সিব্বলের মতো প্রবীণ অথচ বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতারা কিন্তু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সনিয়া গাঁধীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কোনও টুইট করেননি। ফলে বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরমহলে কথা শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি কে সি বেণুগোপাল টুইট করে বলেন, ‘সনিয়া গাঁধী শক্তি, সেবা এবং আত্মত্যাগের প্রতীক। তিনি আমাদের সবার অনুপ্রেরণা।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement