Mathura

রামমন্দিরের রাস্তা খুলতেই সুর চড়ল মথুরা-কাশী নিয়ে

নব্বইয়ের দশকে বিজেপির বহুচর্চিত স্লোগান ছিল, ‘অযোধ্যা তো ঝাঁকি হ্যায়, মথুরা-কাশী বাকি হ্যায়’। দীর্ঘ আইনি জটিলতা পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের পথ তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২০ ০৫:১০
Share:

ফাইল চিত্র।

আগামী বুধবার অযোধ্যারামমন্দিরের ভূমিপুজো ও শিলান্যাস। তার পর? প্রশ্ন উঠেছে, এ বার কি সেই মথুরা ও কাশীর পুরনো বিবাদ নিয়ে ফের সক্রিয় হবে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার? বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব মুখে কুলুপ আঁটলেও, দলের কট্টর মুখ হিসেবে পরিচিত বিনয় কাটিয়ার স্পষ্ট জানিয়েছেন, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির থেকে মসজিদ হটানো তাঁদের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য। তা থেকে পিছিয়ে আসার কোনও প্রশ্নই নেই। একই সুর তুলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও।

Advertisement

নব্বইয়ের দশকে বিজেপির বহুচর্চিত স্লোগান ছিল, ‘অযোধ্যা তো ঝাঁকি হ্যায়, মথুরা-কাশী বাকি হ্যায়’। দীর্ঘ আইনি জটিলতা পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের পথ তৈরি হয়েছে। বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার জানিয়েছেন, এ বার মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির থেকে শাহি ইদগা ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বর থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদ হটানোর পালা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বক্তব্য, অযোধ্যার পাশাপাশি শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরকে ‘মুক্ত’ করতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলে আসছে তারা। তার জন্য এ বার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। বিজেপি নেতৃত্ব এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। কিন্তু ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে একাধিক হিন্দু সংগঠন।

১৯৯১ সালে পি ভি নরসিংহ রাওয়ের সরকার উপাসনাস্থল সংক্রান্ত একটি আইন পাশ করেছিল। ওই আইনের চার নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, স্বাধীনতার দিন থেকে দেশে যে সব ধর্মীয় কাঠামো রয়েছে, তার চরিত্র কোনও ভাবেই পাল্টানো যাবে না। কোনও মন্দিরের জায়গায় যেমন মসজিদ বানানো যাবে না, তেমনই মসজিদ সরিয়ে মন্দিরও বানানো যাবে না। অবশ্য পাঁচ নম্বর ধারায় বলা হয়, ওই আইন রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কারণ ওই আইনি লড়াই স্বাধীনতার আগে থেকে চলছিল। কিন্তু গত জুন মাসে বিশ্ব ভদ্র পুজারী পুরোহিত মহাসঙ্ঘ আইনের চার নম্বর ধারাটি অসংবিধানিক বলে ঘোষণা করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে যায়। সংগঠনের পক্ষে বলা হয়, স্বাধীনতার আগে যে সব হিন্দু মন্দির, মঠ জবরদখল হয়েছিল, ওই আইনের ফলে সেগুলির পুনরুদ্ধার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে ধারাটি প্রত্যাহার করা হোক।

Advertisement

আরও পড়ুন: রামের নগরী যেন দুর্গের ঘেরাটোপে থাকা ‘পীতাম্বরী’ নববধূ

সব মিলিয়ে সলতে পাকানোর কাজ সারা। তবে ওই আইনের ধারাটি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত মথুরা ও কাশী নিয়ে আইনি ভাবে এগোনো সমস্যার। তাই আগে ওই ধারাটি প্রত্যাহারের জন্য জনমত তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই শাহি ইদগার সাড়ে চার একর জমি রঙ্গমঞ্চ বানানোর জন্য চেয়ে বসেছে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ট্রাস্ট। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘১৯৮৪ সালে বিজেপি অযোধ্যা, কাশী ও মথুরা থেকে মসজিদ সরানোর ডাক দেয়। ১৯৮৯ সালে সেই প্রস্তাব পাশ হয়। তার পর রথযাত্রা। ৯২-এ বাবরি মসজিদের পতন। ২০২০ সালে সেই অযোধ্যায় ভূমি পুজো হচ্ছে। সুতরাং বিষয়টিতে যে সময় লাগবে, দল তা জানে। তাই মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী আমরা।’’

মন্দির রাজনীতি করেই জাতীয় স্তরে ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। এখনও সেই হাওয়া তোলার চেষ্টা চলছে। দু’বছর পরে উত্তরপ্রদেশের ভোট। তারও দু’বছর পরে জাতীয় নির্বাচন। তাই আরএসএসের হিন্দুত্বের অ্যাজেন্ডা জিইয়ে রাখতে প্রচারের তালিকায় কাশী-মথুরা অন্তর্ভুক্ত হতে কতক্ষণ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement