ফাইল চিত্র।
ভারতে ফিরতে তৈরি কেএলও প্রধান জীবন সিংহ, জানালেন তাঁর ধর্মপুত্র দেবরাজ সিংহ। দেবরাজ আরও জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ১৯৪৯ সালের ‘মার্জার’ বা ভারতভুক্তি সংক্রান্ত চুক্তির ভিত্তিতে ‘সি ক্যাটাগরি’র রাজ্য হিসেবে কোচ রাজ্য গঠন নিয়ে আলোচনায় সম্মত হওয়ার পরেই জীবন দেশে ফিরতে রাজি হয়েছেন।
তবে এই ধরনের দাবি মানতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কারণ, জীবন সিংহ নিজে পশ্চিমবঙ্গের লোক এবং তিনি যে কোচ রাজ্যের দাবি জানিয়ে আসছেন তাতে পশ্চিমবঙ্গের আটটি জেলা (কার্যত গোটা উত্তরবঙ্গ) রয়েছে। কিন্তু দেবরাজ এই নিয়ে ভাবতে চান না। তিনি বলেন, “জীবন সিংহ কেন্দ্রের ডাকে সাড়া দিয়ে আলোচনায় বসছেন। তাই পশ্চিমবঙ্গের বিষয়টি কেন্দ্র বুঝবে। রাজবংশীদের এ ক্ষেত্রে কোনও বক্তব্য, দাবি বা ভূমিকা থাকার প্রশ্নই নেই।” তাঁর দাবি, যদি পৃথক লাদাখ গঠন করা সম্ভব হয়, তবে কমতাপুর রাজ্য গঠন করাও সাংবিধানিক দিক থেকে অসম্ভব নয়।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার রাজবংশী নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘একটা গভীর চক্রান্ত চলছে। নতুন করে কিছু কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে একটি মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে উত্তরবঙ্গ নেই। এটাও চক্রান্ত। আমরা সব দিকেই নজর রাখছি। দলের নির্দেশ পেলে প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ হবে।’’ দেবরাজ কোচ ও রাজবংশীদের দ্বন্দ্বে দ্বিতীয় পক্ষে থাকলেও এই কাজিয়া শান্তি আলোচনাকে কতটা ব্যাহত করতে পারে, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
গত মাসে কেএলও-র দুই রাজ্যের নেতানেত্রী ও কোচদের আটটি সংগঠনের নেতারা গুয়াহাটিতে বৈঠক করেন। পরে বাংলার কেএলও প্রাক্তনীরা দেখা করেন হিমন্তর সঙ্গে। সেখানেই জীবন সিংহের ফেরার কথা ওঠে। আজ দেবরাজ জানান, দুই রাজ্যের কোচ নেতাদের মিলিত আবেদন ছিল, কোচদের অধিকার ও দাবি নিয়ে নিঃশর্ত আলোচনায় বসতে হবে। আলোচনার মূল ভিত্তি হবে ১৯৪৮ সালের কেন্দ্রের দেওয়া সি ক্যাটাগরির রাজ্যের প্রতিশ্রুতি ও ১৯৪৯ সালের ভারতভুক্তি চুক্তি। অর্থাৎ পৃথক কোচ রাজ্য গঠনই হবে কেএলও-র শান্তি আলোচনার মূল দাবি। দিবাকর বলেন, “কেন্দ্র সেই দাবি নিয়ে আলোচনায় সম্মত হওয়ার অর্থ, প্রথম পর্যায়ে কেএলও-র নীতিগত জয় হল। কেন্দ্রের এই ইতিবাচক মনোভাবকে সম্মান জানিয়েই বাবা দেশে ফেরার তোড়জোড় করছেন।”
মায়ানমারে বাবার সঙ্গে দেখা করে ফিরেছেন দেবরাজ। তাঁর কথায়, “ছেলে হিসেবে আমি চাইব কেএলও-র দীর্ঘদিনের সংগ্রাম শেষ হোক ও বাবা এবং তাঁর সঙ্গীরা মূল স্রোতে ফিরে কোচদের অধিকার অর্জনের লড়াইয়ে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দিন।”
(সহ-প্রতিবেদন: নমিতেশ ঘোষ)