বিধানসভার সূচনাতেই বিরোধিতার মুখে দেবেন্দ্র ফডণবীস। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মহারাষ্ট্র বিধানসভার তিন দিনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হল শনিবার। আর গোড়াতেই অধিবেশন বয়কট করে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে অসহযোগিতার বার্তা দিলেন বিরোধী উদ্ধবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি (শরদ)-এর জোট ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র বিধায়কেরা। বিধানসভা ভবনের বাইরে ছত্রপতি শিবাজির মূর্তির তলার জড়ো হয়ে নতুন সরকারকে ‘অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত’ বলে চিহ্নিত করেন তাঁরা।
বিরোধী জোটের দাবি, মহারাষ্ট্র বিধানসভার সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে ইভিএম-কারচুপি হয়েছে। ঘটনার তদন্তও চেয়েছে বিরোধী তিন দলের জোট। বিরোধীদের বিক্ষোভের মধ্যেই বিধানসভার প্রোটেম স্পিকার বিজেপি বিধায়ক কালিদাস কলম্বকর নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানো শুরু করেন। তবে শনিবার কোনও বিরোধী বিধায়ক শপথ নেননি। প্রসঙ্গত, এ বার বিধানসভা ভোটে মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২৩৫টিতেই জিতেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন ‘মহাজুটি’।
বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য আস্থাপ্রস্তাব পেশ করতে পারেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। ৯ ডিসেম্বর আস্থাপ্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির পরে বিশেষ অধিবেশন মুলতুবি হবে। এর পরে ১৬-২১ ডিসেম্বর হবে মহারাষ্ট্র বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, আস্থাভোটের পরেই ফডণবীস মন্ত্রিসভা সম্প্রসারিত হবে। হবে মন্ত্রীদের দফতর বণ্টনও। অন্য দিকে, সমাজবাদী পার্টি শনিবার বিরোধী জোটের বিরুদ্ধে ‘হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি’ সমর্থনের অভিযোগ এনে ‘একলা চলো’র সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। দলের রাজ্য সভাপতি তথা বিধায়ক আবু আজমি বলেন, ‘‘৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙার দিনের একটি বিজ্ঞাপনকে সমর্থন জানিয়েছে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা (ইউবিটি)। আমরা আর মহাবিকাশ আঘাড়ীর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখব না।’’
বৃহস্পতিবার বিকেলে মুম্বইয়ের আজ়াদ ময়দানে রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণনের কাছে শপথবাক্য পাঠ করেন মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস। তাঁর সঙ্গেই শপথ নেন দুই উপমুখ্যমন্ত্রী— শিবসেনা (শিন্ডে)-র প্রধান একনাথ শিন্ডে এবং এনসিপি (অজিত)-এর সভাপতি অজিত পওয়ার। কিন্তু অন্য কোনও মন্ত্রী শপথ নেননি। শাসকজোট ‘মহাজুটি’র একটি সূত্র জানাচ্ছে, স্বরাষ্ট্র-সহ কয়েকটি দফতর নিয়ে শরিকি টানাপড়েনের কারণেই এ বিষয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়া হচ্ছে। সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে এখনও স্বরাষ্ট্র দফতরের দাবিতে অনড় থাকলেও সম্ভবত তিনি তা পাবেন না। পরিবর্তে রাজস্ব দফতর দেওয়া হতে পারে তাঁকে। আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পেতে পারেন অর্থ দফতর।