বরপেটায় রোগী দেখছেন রবীন কুমার। নিজস্ব চিত্র
জেলার আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা সামলাতে হচ্ছে তাঁকে। সেই সঙ্গে কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়েও চোখ রাখতে হচ্ছে বিভিন্ন দিকে। তাই বরপেটার এসপি বিলক্ষণ জানেন, জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ডাক্তার ও নার্সের সংখ্যা কম। পালা করে ডিউটি করতে গিয়ে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে সেখানে। তাই নিজের দফতরের কর্মীদের চিকিৎসার ভার শেষ পর্যন্ত নিজের হাতেই তুলে নিলেন এসপি রবীন কুমার।
পেশায় এখন পুলিশ হলেও আইপিএস হওয়ার আগে তিনি এমবিবিএস ও এমডি করেছেন মেরঠের লালা লাজপত রায় মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজ থেকে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে ছিলেন জেলায় প্রথম। গাজিয়াবাদের বাসিন্দা রবীন ২০১৩ সালের আইপিএস। অসম ক্যাডারে যোগ দিয়ে তেজপুরে পোস্টিং হওয়ার পরে প্রথম তিনি পুলিশ কর্মীদের নিয়ে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করেছিলেন।
করোনা বাড়াবাড়ি চেহারা নেওয়ার পরে তিনি ডিজিপি ভাস্করজ্যোতি মহন্তর অনুমতি নিয়ে পুলিশ রিজার্ভের মধ্যেই তৈরি করে ফেলেন ৫০ শয্যার কোভিড হাসপাতাল। সেখানে আছে ১৪টি আইসলেশন বেড ও ৪টি আইসিইউ বেডও।
আরও পড়ুন: কোভিশিল্ড পরীক্ষা নিয়ে সিরামকে শো-কজ
গত কয়েক মাসে বরপেটায় ৭৬ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাঁদের সকলের চিকিৎসা করেছেন রবীন। তাঁরা সকলে শুধু সুস্থই হননি, কাজেও যোগ দিয়েছেন বেশির ভাগ।
হাসপাতালে চিকিৎসার পাশাপাশি ৫০ বছরের উপরের পুলিশকর্মীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করেন এই চিকিৎসক এসপি। যাঁদের হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস, হাঁপানি, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি রয়েছে, সেই কর্মীদের বাছাই করে অফিসে কাজ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এসপি-র প্রশংসা করে বলেন, “সমাজ ও মানবিকতার দিক থেকে রবীন কুমারের অবদান অনেক। তিনি সত্যিকারের কোভিড-যোদ্ধা।” শুধু চিকিৎসাই নয়, লকডাউনে আটকে পড়া মানুষদের জন্য ৪০ দিন ধরে কমিউনিটি কিচেনও চালিয়েছে বরপেটা পুলিশ।
মানবসেবায় এক পুলিশ অফিসারের এই ভূমিকার কথা জানতে পেরে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করে উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নায়ডু টুইট করেছেন গত সোমবার। রবীনের কথায়, “আমি ভাগ্যবান যে পুলিশ ও ডাক্তারি— দু’টো কাজই একসঙ্গে করে সমাজের সেবা করতে পারছি।”