লোকসভায় বক্তব্য পেশ করছেন আজম খান। ছবি: টুইটার
আজম খানের বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে উত্তাল লোকসভা। স্পিকারের চেয়ারে থাকা বিজেপি সাংসদ রমা দেবীকে উদ্দেশে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ আজম খান বলেন, ‘‘আপনাকে এত ভাল লাগে যে আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ইচ্ছে করে।’’ এর পরই বিজেপি সাংসদরা আজম খানের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে হই হট্টগোল জুড়ে দেন। অখিলেশও আজম খানের পাশে দাঁড়ান। যদিও পরে দু’জনই লোকসভা ত্যাগ করেন।
লোকসভায় চলছিল তিন তালাক বিল নিয়ে আলোচনা। স্পিকারের চেয়ারে তখন বিজেপির বর্ষীয়ান সাংসদ রমা দেবী। বক্তব্যের মাঝেই আজম খান এক সময় বলেন, ‘‘আপ মুঝে ইতনি আচ্ছি লাগতি হ্যায় কি মন করতা হ্যায় কি আপ কি আঁখো মে আঁখে ডালে রাহুঁ।’’ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবাদ করে রমা দেবী বলেন, এটা সংসদে কথা বলার ভাষা নয়। বক্তব্যের ওই অংশ বাদ দেওয়ার কথাও বলেন রমা দেবী।
তখন আজম খান আবার বলেন, ‘‘আপনি আমার বোনের মতো।’’ কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। বিজেপির মন্ত্রী সাংসদরা তুমুল হই হট্টগোল শুরু করে দিয়েছেন। আজম খানকে ক্ষমা চাইতে হবে— এই দাবিতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
এর মধ্যে আবার আজম খানের হয়ে ব্যাট ধরেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। অখিলেশের বক্তব্য, ‘‘আমি মনে করি না আজম খান চেয়ারকে অসম্মান করেছেন। এই লোকগুলো (বিজেপি সাংসদরা) খুব অসভ্য। আজম খানের বিরুদ্ধে আঙুল তোলার ওঁরা কে?’’ তাতে কার্যত আগুনে ঘি পড়ে। আরও উত্তাল হয়ে ওঠে লোকসভার অধিবেশন।
আরও পড়ুন: লোকসভায় তিন তালাক বিল নিয়ে আলোচনা, হুইপ জারি বিজেপির
আরও পড়ুন: ‘কিন্ত সরকার চুপ...!’ গণপিটুনি ও গোরক্ষকদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে টুইটারে সরব নুসরত
এর মধ্যেই চেয়ারে ফিরে আসেন স্পিকার ওম বিড়লা। তিনি আজম খানকে কার্যত ভর্ৎসনা করেন। অন্য দিকে আজমের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে তখনও সরব বিজেপির সাংসদরা। কিন্তু ক্ষমা চাইতে রাজি হননি আজম। উল্টে তিনি বলেন, তাঁর বক্তব্যের কোনও অংশ অসংসদীয় বলে মনে হলে তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতেও রাজি। এর পর অখিলেশ এবং আজম খান বেরিয়ে যান।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সংসদের ভিতরে এক জন মহিলার উদ্দেশে এই ধরনের মন্তব্য কী ভাবে করতে পারেন কোনও সাংসদ। তাও তিনি স্পিকারের চেয়ারে থাকাকালীন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করেন, এটা শুধু অসংসদীয় ভাষাই নয়, স্পিকারের চেয়ারেরও অসম্মান।