জল মাপছে দিল্লি

আপাতত দু’দেশের সেনার মধ্যে ন্যূনতম যোগাযোগ যাতে বজায় থাকে, সে কারণে ভারত এবং পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে বৈঠক চলবে। ইমরানের সঙ্গে সাধারণ পর্যায়ে ‘সফট এনগেজমেন্ট’ করা যেতে পারে কি না, ভেবে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪০
Share:

ইমরান খান

কাশ্মীর নিয়ে কথা বলতে চান, আলোচনায় সমাধান খুঁজতে চান। কাশ্মীর আর বালুচিস্তান নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপের পালা বন্ধ করতে চান। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে চান।

Advertisement

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার আগে দেশবাসীর প্রতি বক্তৃতায় ইমরান খান তাঁর ভবিষ্যত কর্মসূচির যে রূপরেখা দিলেন, তাতে ভারত সম্পর্কে ‘প্রত্যাশিত’ কথাগুলোই আরও এক বার শোনা গেল। সে দিকে নজর রাখলেও বিষয়টি নিয়ে এখনই মুখ খুলছে না সাউথ ব্লক। তবে সন্ত্রাস বন্ধ না হলে আলোচনা নয়, এই অবস্থানেই এখনও অবধি অনড় তারা।

এ দিনের বক্তৃতায় ভারতের প্রসঙ্গে সন্ত্রাস শব্দটিই সে ভাবে ইমরানের মুখে শোনা যায়নি। পড়শি দেশগুলির সঙ্গে সম্ভাব্য নীতি নিয়ে বলতে শুরু করে চিন, আফগানিস্তান, ইরান, সৌদি আরব নিয়ে বলা শেষ করে তবে ‘হিন্দুস্তান’ নিয়ে মুখ খুললেন। কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথাও তুললেন। কিন্তু সন্ত্রাস নিয়ে সরাসরি একটি শব্দ নয়। শুধু দাবি করলেন, ভারত এক তরফা পাকিস্তানকে দুষে আসছে। তবু ভারতের সঙ্গে আলোচনার জানলা খোলার চেষ্টা যে করবেন, সে কথা বলেছেন ইমরান। বলেছেন, ক্রিকেটের সূত্রে ভারতকে তিনি আর পাঁচ জনের থেকে ভালই চেনেন। সম্প্রতি ভারতীয় মিডিয়া তাঁকে নিয়ে নেতিবাচক লেখায় হতাশার কথাও তুলেছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার এখনই অত্যুৎসাহ দেখাতে রাজি নয়। কারণ তাদের কাছে এটা স্পষ্ট, ইমরান মুখে যাই বলুন, চলবেন সেই সেনা-আইএসআই নির্দেশিত পথেই। এর আগে নওয়াজ় শরিফের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক দৌত্য বাড়িয়ে নিতে গিয়ে মোদীর চার বছর যে জলে গিয়েছে— সেটা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করেছে বিদেশ মন্ত্রকের বড় অংশ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার দিন নওয়াজ়কে ডাকা বা বিনা আমন্ত্রণে নওয়াজ়ের বাড়ি গিয়ে কাজের কাজ হয়নি। বরং তার পরই পঠানকোটের সেনা ছাউনিতে আক্রমণ করে পাক সমর্থনপুষ্ট জঙ্গিরা। তবে সাউথ ব্লকের আর একটা বক্তব্যও আছে। তারা মনে করে, একাধিক শক্তিকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বদলে একটি নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করা শ্রেয়। এমন নেতৃত্ব, যা পাকিস্তানের হয়ে শেষ কথা বলার ক্ষমতা রাখে। সেনা-সমর্থন সঙ্গে নিয়ে ইমরান আসায় এই দিক থেকে সুবিধা হতে পারে। আপাতত দু’দেশের সেনার মধ্যে ন্যূনতম যোগাযোগ যাতে বজায় থাকে, সে কারণে ভারত এবং পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে বৈঠক চলবে। ইমরানের সঙ্গে সাধারণ পর্যায়ে ‘সফট এনগেজমেন্ট’ করা যেতে পারে কি না, ভেবে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement