ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী আরজেডি-র মান ভাঙাতে নিজেই এগিয়ে এলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদকে ফোন করে বেশ খানিক ক্ষণ কথা বলেন তিনি। তবে সেই এক ফোনেই যে বরফ গলেছে, এমন কোনও ইঙ্গিত লালু বা তাঁর দলের তরফে মেলেনি।
তিন বছর তিহাড় জেলে কাটিয়ে সম্প্রতি পটনায় ফিরেই দীর্ঘদিনের শরিক কংগ্রেসকে তুলোধোনা করতে শুরু করেন লালুপ্রসাদ। বলে দেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট অতীত। নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লালু বলেন— “কংগ্রেসকে কেন আসন ছাড়ব, তারা ভোটে লড়ে জামানত খোয়াবে বলে?” দু’টি আসন তারাপুর ও কুশেশ্বর আস্থানের উপনির্বাচনে কংগ্রেস ও আরজেডি, দুই শরিকই লড়াইয়ে নেমেছে। কংগ্রেস নেতা ভক্তচরণ দাস বলেন, তাঁদের আক্রমণ করে লালু আসলে বিজেপিকে জেতানোর খেলায় নেমেছেন। পাল্টা লালু ভক্তচরণকে দেহাতি ভাষায় গালাগালি দেওয়ায় বিহার কংগ্রেস চটে লাল। কয়েক জন নেতা তো নেতৃত্বকে পরামর্শ দেন, এই ভাবে অমানিত হওয়ার চেয়ে বিহারে নিজের ক্ষমতায় লড়ুক কংগ্রেস।
কিন্তু সনিয়া যে অন্য কথা ভাবছেন, লালুকে এ দিন তাঁর ফোন করার সিদ্ধান্তই তার প্রমাণ। সাড়ে তিন দশক ধরে লালু কংগ্রেসের বিশ্বস্ত জোটসঙ্গী। প্রথম ইউপিএ ক্ষমতায় আসার পরে শরদ পওয়ারের মতো শরিক নেতাও ইটালিতে জন্ম নেওয়া সনিয়া গাঁধীর প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এমনকি কংগ্রেসের অনেক নেতাও ঠারেঠোরে সেই আপত্তিতে সায় দিয়েছিলেন। সেই সময়েও লালুপ্রসাদ জোর গলায় বলেছিলেন, ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন হিসেবে সনিয়ারই প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত। সেই লালুপ্রসাদ হঠাৎ আজ সুর বদলানোয় রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের চেয়ে তাঁর উপরেই আস্থা রাখলেন সনিয়া। তৃণমূল কংগ্রেস ও এনসিপি-ও শক্তি খোয়ানো কংগ্রেসকে বিঁধতে ছাড়ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল প্রকাশ্যেই বলছে, বিজেপি-বিরোধী জোটের মুখ আর হতে পারে না কংগ্রেস। কিন্তু সেই কথা লালুপ্রসাদও বলায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ফোন করার সিদ্ধান্ত নিলেন সনিয়া।
এ দিকে তারাপুরে উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে এ দিন যুবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসার পরে কেন তিনি সে কথা মনে রাখছেন না, সেই প্রশ্ন তুলে স্লোগান দেন প্রায় শ’দুয়েক কমবয়সী। নীতীশ এই বিক্ষোভকে বিরোধীদের সাজানো বলে মন্তব্য করলেও লালুর দল তা মানতে চায়নি।