সনিয়া গান্ধী। — ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপুঞ্জে গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি ভারত। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ‘তীব্র বিরোধিতা’ করছে কংগ্রেস। সোমবার সেই বিরোধিতার কথা জানিয়েছেন দলের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। পাশাপাশি ইজ়রায়েলে গত ৭ অক্টোবর সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যে হামলা চালিয়েছিল, তারও সমালোচনা করেছেন সনিয়া। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইজ়রায়েলের সঙ্গে স্বাধীন, সার্বভৌম, নিরাপদ দেশ প্যালেস্টাইনের শান্তি স্থাপনের জন্য যে আলোচনার প্রয়োজন, তার পক্ষেই বরাবর রয়েছে তাঁর দল কংগ্রেস।
একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে সনিয়া জানিয়েছেন, ‘মানবিকতা এখন বিচারাধীন’। তাঁর কথায়, ‘‘ইজ়রায়েলে যে হামলা হয়েছে, তাতে আমরা ধাক্কা খেয়েছি। ইজ়রায়েল পাল্টা যে জবাব দিল, তাতে আরও ধাক্কা খেলাম। আমাদের বিবেক জেগে ওঠার আগে আরও কত প্রাণ যাবে?’’ ৭ অক্টোবর আচমকাই ইজ়ায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে থাকে হামাস। তাতে মারা গিয়েছেন প্রায় ১,৪০০ জন। আরও প্রায় ৩০০ জনকে অপহরণ করে পণবন্দি করেছে হামাস। সনিয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আচমকা এই আক্রমণ ইজ়রায়েলের কাছে বড় ধাক্কা। কংগ্রেস মনে করে আধুনিক পৃথিবীতে হিংসার কোনও জায়গা নেই। পরের দিন হামাস যে আক্রমণ চালিয়েছে, তাকেই ধিক্কার জানাচ্ছি।’’
সনিয়া জানিয়েছেন, ইজ়রায়েল সেনার ‘নির্বিচার’ হামলায় গাজ়ায় প্রাণ হারাচ্ছেন নিরপরাধ মহিলা, শিশু-সহ হাজার হাজার মানুষ। তাঁর কথায়, ‘‘ইজ়রায়েল রাষ্ট্রের ক্ষমতা এখন বর্ষিত হচ্ছে গাজ়ার নিরপরাধ মানুষের উপর, যাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। হামাসের পদক্ষেপে যাঁদের কোনও ভূমিকা ছিল না, সেই শিশু, নারী, পুরুষদের লক্ষ্য করে অস্ত্র প্রয়োগ করছে পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনী।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে কংগ্রেস দাবি করে আসছে, প্যালেস্টাইন এবং ইজ়রায়েলের মানুষদের শান্তিতে বাস করার অধিকার রয়েছে। এর পরেই সনিয়া কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘ইজ়রায়েলের মানুষের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বকে অবশ্যই আমরা মূল্য দিচ্ছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ইজ়রায়েলের প্রতি সংহতি জানিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছিলেন, তাতে প্যালেস্টাইনের অধিকার নিয়ে কোনও কথা বলেননি।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জে গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোটাভুটিতে ভারতের বিরত থাকার সিদ্ধান্তকেও কটাক্ষ করেছেন সনিয়া। তিনি বলেন, ‘‘এটা দু্র্ভাগ্যজনক যে, অনেক প্রভাবশালী দেশ পক্ষপাতিত্ব করছে, যখন তাদের যুদ্ধ থামানোর সব রকম চেষ্টা করা উচিত। সেনাবাহিনীর কার্যকলাপ থামানোর জন্য শক্তিশালী কণ্ঠের প্রয়োজন।’’