দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন কায়েম করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। অথচ প্রশাসনে দুর্নীতি খুঁজে বের করবেন যাঁরা, সেই সাংবিধানিক পদ গুলিই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। একে হাতিয়ার করে রাহুল-সনিয়া গাঁধীরা সরকারকে চেপে ধরতেই শূন্যপদ পূরণে এ বার দ্রুত উদ্যোগ নিতে শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার ও মুখ্য তথ্য কমিশনারের মতো সাংবিধানিক পদগুলির নিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর সচিবালয়ে একটি বৈঠক ডাকেন। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ছাড়াও ছিলেন লোকসভার কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খার্গে। বৈঠকে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সূত্রের খবর, সরকারের তরফে সম্ভাব্য নামের একটি তালিকা রাখা হয়। কিছু নাম নিয়ে আপত্তি করেন খার্গে। সেই সঙ্গে তিনি একটি পাল্টা তালিকাও দেন প্রধানমন্ত্রীকে। স্বাভাবিক ভাবেই আজ বিষয়টি নিয়ে কোনও মীমাংসা হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক হয়েছে। সরকার সাংবিধানিক শূন্যপদগুলি দ্রুত পূরণে আগ্রহী।’’
কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনারের পদ থেকে প্রদীপ কুমার এবং ভিজিল্যান্স কমিশনার হিসেবে জে এম গর্গ গত সেপ্টেম্বরে অবসর নিয়েছেন। অগস্ট মাস থেকে শূ্ন্য রয়েছে মুখ্য তথ্য কমিশনারের পদও। খালি আরও তিন জন তথ্য কমিশনারের পদ। অথচ তথ্য কমিশনে প্রায় চল্লিশ হাজার আবেদন পড়ে রয়েছে। লোকসভায় এই প্রসঙ্গ তুলে সনিয়া গাঁধী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, সরকার কৌশলে এই সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ঠুঁটো করে রাখছে। যাতে সাধারণ মানুষ কোনও বিষয়ে সরকারের কাছে কৈফিয়ত না চাইতে পারে। ভিজিল্যান্স কমিশনারের পদই যদি খালি থাকে, তা হলে প্রশাসনে দুর্নীতি বা অনিয়মের তদন্ত করবে কে?
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ অবশ্য পাল্টা যুক্তি দিয়েছিলেন, মামলার কারণেই বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, এ সব যুক্তি দিয়ে মানুষকে বোঝানো যাবে না। তা ছাড়া, কংগ্রেসও সরকারের বিরুদ্ধে তাদের প্রচার জোরালো করে তুলতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতেই শূন্যপদ পূরণে এখন সক্রিয় হলেন মোদী।
অনেকের মতে, দ্রুত বিষয়টির নিষ্পত্তির সম্ভাবনা কম। কারণ, সরকার যাঁদের নিয়োগ করতে চাইবে, তাঁদের নিয়ে কংগ্রেসের প্রশ্ন তোলার সম্ভাবনা থাকবে। ঠিক যেমন ইউপিএ জমানায় বিজেপি নেতারা করতেন।