বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মোদী সরকারের ৯ জন মন্ত্রীকে নিয়ে বিজেপি দফতরে সরকারি কাজের পর্যালোচনা করলেন অমিত শাহ। সামনের বিধানসভা ভোটে জয়ের রণকৌশল ঠিক করার পাশাপাশি লোকসভায় ৩৬০টির বেশি আসন জেতার ছকও কষলেন। জোর থাকছে পশ্চিমবঙ্গেও।
মন্ত্রীদের বিজেপি দফতরে ডেকে অমিত শাহের এই বৈঠকের পরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, দলের সভাপতি কি পারেন এ ভাবে সরকারি কাজের পর্যালোচনা করতে? প্রশ্ন উঠেছে, অমিত শাহ কি ‘সুপার-পিএম’? রবিশঙ্কর প্রসাদ, পীযূষ গয়াল, জে পি নড্ডা, ধর্মেন্দ্র প্রধান, অনন্ত কুমার, প্রকাশ জাভড়েকর, নরেন্দ্র সিংহ তোমর, নির্মলা সীতারমণ, মনোজ সিন্হার মতো মন্ত্রীরা ছিলেন সেই বৈঠকে। যা নিয়ে রাজনাথ সিংহ, সুষমা স্বরাজ, নিতিন গডকড়ীর মতো নেতারা অসন্তুষ্ট।
তবে অমিতের এই বৈঠক মনে করিয়ে দিচ্ছে সিপিএমের মতো দলের কাজের পদ্ধতিকে। যেখানে নিজেদের রাজ্য সরকারের কাজের পর্যালোচনাই শুধু নয়, সে সবের ভাল মন্দ ঠিক করা কিংবা সরকারের দিশা দেখানোর নামে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাতেন সংগঠনের নেতারা। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় অমিত শাহের উদ্দেশ্য তার থেকে আলাদা বলেই দাবি করছেন বিজেপির নেতারা। বরং তাঁদের ব্যাখ্যা, মন্ত্রীরাও দলের নেতা। বৈঠকে সরকারি প্রকল্পের সমীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তা করা হয়েছে ভোটের দিকে তাকিয়ে। সরকারি কাজ তৃণমূল স্তর পর্যন্ত কতটা পৌঁছল, তার উপরেই তো ভোটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
আরও পড়ুন: মোদী-সঙ্ঘকে তির, এক মঞ্চে বিরোধীরা
বিজেপির এক নেতার কথায়, দেড় বছরের মাথায় লোকসভা ভোট। তার আগে গুজরাত, হিমাচল, কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন। অমিত শাহ চান, লোকসভায় বিজেপি একার জোরে ৩৬০টির বেশি আসন জিতুক। এর মধ্যে দেড়শোটি এমন আসন রয়েছে, দল যেখানে কোনও দিন জেতেনি। সে কারণে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, ওডিশার মতো রাজ্যগুলিতে বেশি জোর দিতে বলেছেন অমিত। নেতা-মন্ত্রীদের ৩-৪টি করে কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজই দিল্লিতে শরদ যাদবের উদ্যোগে বিরোধীরা একজোট হন। সেখানে তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, গত লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-র ভোট ৩১ শতাংশ। আর সব বিরোধীরা একজোট হলে ভোট হয় ৬৯ শতাংশ। রাহুল গাঁধীর দাবি, বিরোধীরা একসঙ্গে লড়লেই মোদীকে কুপোকাত করা যাবে। কিন্তু বৈঠকে অমিত শাহের দাবি, ‘‘লোকসভায় বিজেপির প্রতিযোগিতা শুধু বিজেপির সঙ্গেই। আমাদের সামনে কেউ টিকবে না।’’
প্রতি ৪ মাসে একটি করে সমীক্ষা করছেন অমিত। আজকের বৈঠকে উত্তরপ্রদেশ, অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রীদেরও ডাকা হয়েছিল। সব মিলিয়ে প্রায় ৩১ জনের উপস্থিতিতে মেগা-বৈঠকে দলকে এখন থেকেই ভোটযুদ্ধে ঝাঁপাতে বলেছেন অমিত শাহ। বিজেপি সভাপতির কৌশল শুনে কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘ক’দিন আগেই নিজের রাজ্য গুজরাতে অতি-আত্মবিশ্বাসের খেসারত দিয়েছেন অমিত শাহ। বিরোধীরা একজোট হয়ে লড়লে সব অঙ্কই গোলমাল হয়ে যাবে। ৩৬০ না আবার ৩৬-এ এসে ঠেকে!’’