রাকেশ্বর সিংহ মনহাস।
ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরে অপহৃত সেই সিআরপিএফ জওয়ানকে মুক্তি দিল মাওবাদীরা। প্রায় ১০০ ঘণ্টা বন্দি রাখার পর। সরকারি সূত্রে এই খবর জানানো হয়েছে। সুকমা-বিজাপুর সীমানার জাগারগুণ্ডা-জোড়াগুণ্ডা-তারেমে মাওবাদী হামলায় প্রাণ হারান কমপক্ষে ২২ জন জওয়ান। আহত হন আরও ৩১ জওয়ান। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন রাকেশ্বর সিংহ মনহাস নামে ওই জওয়ান। তাঁকে ছাড়া হল বৃহস্পতিবার বিকেলে। একটি সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে শহরে নিয়ে আসা হয়।
সম্প্রতি রাকেশ্বরের বছর পাঁচেকের মেয়ে রাঘবী সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে কাঁদো কাঁদো মুখে মাওবাদী ‘কাকা’র কাছে আর্জি জানায়, বাবাকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর আর কান্না চাপতে পারনি। সেই ছবি মুহূর্তেই ভাইরাল হয় নেটমাধ্যমে।
বৃহস্পতিবার প্রায় হাজার গ্রামবাসীর সামনে মুক্তি দেওয়া হয় সিআরপিএফের কোবরা বাহিনীর ওই জওয়ানকে। মুক্তি পাওয়ার পর সংবাদসংস্থাকে রাকেশ্বরের স্ত্রী বলেন, ‘‘আজ আমার জীবনে সব চেয়ে খুশির দিন। আমি জানতাম ও ফিরে আসবে।’’
রাকেশ্বরের মুক্তির জন্য মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনা চালাতে সরকার এক প্রতিনিধি দলকে দায়িত্ব দিয়েছিল। এঁদের মধ্যে ছিলেন ৯১ বছরের ধরমপাল সিংহ। স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং সমাজসেবী পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত ধরমপাল ওই অঞ্চলে সম্মাননীয় ব্যক্তি। এক আদিবাসী নেতা, কিছু সাংবাদিক ও কয়েক জন সরকারি অফিসার ছিলেন ওই দলে। তাঁদের সঙ্গে আলোচনাতেই রফাসূত্র বেরোয়। শেষে ওই সরকারি দল এবং গ্রামবাসীদের সামনেই মুক্তি দেওয়া হয় ওই জওয়ানকে।
১১ বছরের আগের দান্তেওয়াড়ার স্মৃতি উস্কে ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ২২ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন। ৬ এপ্রিল ২০১০-এ এই ছত্তীসগঢ়ের দান্তেওয়াড়ার চিন্তলনার গ্রামে অভিযানে গিয়ে মাওবাদীদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ৭৬ জন। তার ঠিক ১১ বছর পর ২০২১-এর ৩ এপ্রিল, অর্থাৎ গত শনিবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন রাকেশ্বর। অবশেষে মুক্তি পেলেন বৃহস্পতিবার।