সুধা ভরদ্বাজ। —ফাইল চিত্র।
তিন বছরের বেশি সময় জেলে কাটানোর পরে আজ দুপুরে বাইকুল্লা মহিলা জেলের বাইরে পা রাখলেন ভীমা-কোরেগাঁও মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আইনজীবী তথা সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ।
নীল সালোয়ার কামিজ পরিহিত মুখে নীল মাস্ক পরা সুধার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছিল গাড়ি। তাতে ওঠার আগে অপেক্ষমান সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের দিকে হাত নাড়েন এই সমাজকর্মী।
চলতি মাসের ১ তারিখে বম্বে হাই কোর্ট সুধার জামিন মঞ্জুর করে। তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। কিন্তু দিন দুয়েক আগে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ইউ ইউ ললিত, বিচারপতি এস আর ভাট এবং বিচারপতি বেলা টি ত্রিবেদীর বেঞ্চ বলেছিল, ‘‘বম্বে হাই কোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজন নেই।’’ এনআইএ-র আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে জামিন পাওয়ার ব্যাপারে সুধার আর কোনও বাধা ছিল না। ভীমা-কোরেগাঁও মামলায় তিনিই প্রথম অভিযুক্ত যিনি জামিন পেলেন।
গত কালই এনআইএ-র বিশেষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই সমাজকর্মীর আইনজীবী। ৫০ হাজার টাকা বন্ডে জামিন মিললেও ১৬টি কড়া শর্ত রেখেছে বিশেষ আদালত। গত কাল বিকেল ৫টার মধ্যে যেহেতু জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্রের কাজ শেষ করা যায়নি, তাই আজ জেল থেকে বার হন সুধা। জামিনের শর্ত হিসেবে মুম্বইয়েই থাকতে হবে এই সমাজকর্মীকে। শহরের বাইরে যেতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। তাঁর যাবতীয় গতিবিধি সম্পর্কে জানাতে হবে তদন্তকারীকে সংস্থাকে। শর্ত অনুযায়ী সুধাকে তাঁর পাসপোর্ট আদালতে জমা রাখতে হয়েছে। তিনি তাঁর বাড়ি হরিয়ানায় এবং কর্মস্থল ছত্তীসগঢ়ে যেতে পারবেন না। এই মামলা নিয়ে কোথাও মুখ খুলতে পারবেন না এমনকি, করতে পারবেন না লিখিত মন্তব্যও।
২০১৮ সালের অগস্টে ইউএপিএ-তে গ্রেফতার করা হয়েছিলে সুধাকে। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুণেতে এলগার পরিষদের সভায় তিনি উস্কানিমূল বক্তৃতা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। সুধা জামিন পাওয়ায় স্বভাবতই খুশি মানবাধিকার সংগঠনগুলি। তাদের বক্তব্য, ইউএপিএ-র বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচারের ফল মিলেছে। ইউএপিএ একটি অগণতান্ত্রিক আইন। আমজনতা যে ভাবে সুধার জামিনের পক্ষে সরব হয়েছিল, তা থেকে স্পষ্ট মানুষের মত এই আইনের বিরুদ্ধে।