বরফে ঢেকেছে কাশ্মীরের ডোডা জেলা। পিটিআই
বছর শেষের আগেই হিমেল হাওয়ায় কাঁপন ধরল রাজধানী-সহ উত্তরের ভারতের রাজ্যগুলিতে। জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, হিমাচলপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের বেশ কিছু জায়গা ঢাকল বরফের চাদরে। পারদ নামল পঞ্জাব, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থানে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে হিমালয়ের কোল-ঘেঁষা রাজ্যগুলির কোথাও বিক্ষিপ্ত কোথাও ভাল রকম বরফ পড়েছে। পার্বত্য হিমালয় থেকে নেমে আসা শুষ্ক-শীতল বায়ুপ্রবাহের জেরে তাপমাত্রা কমেছে সমতলেও। দিল্লি-সহ উত্তর ভারতে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এ দিন রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩.৬ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দু’টোই স্বাভাবিকের থেকে বেশ কম। মঙ্গলবার রাতে হরিয়ানার হিসারে তাপমাত্রা নামল শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, নববর্ষের রাতে তাপমাত্রা আরও নামবে।
কাশ্মীর, হিমাচল, উত্তরাখণ্ডে অবশ্য তুষারপাতের আবহে উৎসবের মেজাজ ফিরেছে। করোনার জেরে সারা বছর মন্দায় থাকা পর্যটন ব্যবসায়ীরা বছর শেষের দিনগুলোয় আশার আলো দেখছেন। মানালি, কুফরির মতো পর্যটন স্থলগুলিতে বরফ দেখতে ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকেরা। স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেশির ভাগ হোটেলই খালি নেই।
কাশ্মীরের বদগাম ও পুলওয়ামায় বরফ পড়েছিল আগেই। আজ সকাল সাতটা নাগাদ শ্রীনগরে তুষারপাত শুরু হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, উত্তর কাশ্মীরের গুলমার্গে এখন সাত ইঞ্চি পুরু বরফের চাদর। দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাম বা সোনমার্গেও তিন থেকে চার ইঞ্চি তুষারপাত হয়েছে। পুরো উপত্যকায় তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি নেমেছে গুলমার্গে। মাইনাস ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ২১ ডিসেম্বর থেকে কাশ্মীরে শুরু হয়ে গিয়েছে বরফ পড়ার উৎসব ‘চিলাই-কালান’। চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
শূন্যের নীচে তাপমাত্রা নেমেছে কিলং, কল্পা, ডালহৌসি, মানালি, কুফরিতে। শিমলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১.৬ ডিগ্রি।
শৈত্যপ্রবাহের জেরে গড় তাপমাত্রা কমেছে রাজস্থানে। মাউন্ট আবুতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জয়পুর, ভরতপুর, বিকানের, অজমের, কোটা-সহ বিভিন্ন জেলায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রবল শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
উত্তরপ্রদেশের হাওয়ায় আর্দ্রতার পরিমাণ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জায়গায় জায়গায় পাতলা থেকে ঘন কুয়াশা দেখা গিয়েছে। রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল বরেলীতে (৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস), সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ধরা পড়েছে প্রয়াগরাজে (২৬ ডিগ্রি)।
মঙ্গলবার সকালে ঠান্ডা হাওয়ায় ঘুম ভেঙেছে মুম্বইবাসীর। এ দিন বাণিজ্যনগরীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হাওয়া অফিসের মতে, এই মরসুমে শহরের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল এ দিনই। নাসিক, পুণে, ঠাণে-সহ তাপমাত্রা কমেছে গোটা মহারাষ্ট্রেই।