ইমতিয়াজ মির। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
‘‘যখন তোমরা বেছে বেছে শুধু ওঁকেই মারলে, তখন আমাদের বাঁচিয়ে রাখলে কেন? এস, তোমরা এসে আমাদের সবাইকে মেরে ফেল। আমরা থাকতে পারছি না।’’
জম্মু-কাশ্মীরে অপহরণের পর খুন হয়ে যাওয়া সিআইডি-র সাব ইনস্পেক্টর ইমতিয়াজ মিরের কোনও বন্ধু বা আত্মীয়ের করা ওই পোস্ট এখন ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ফেসবুকে। পোস্টটি করা হয়েছে ইমতিয়াজের ঘাতক জঙ্গিদের উদ্দেশেই। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে আসার পথে রবিবার পুলওয়ামা জেলার ওয়াহিবাগ এলাকায় ইমতিয়াজকে গাড়ি থেকে নামিয়ে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা।
জঙ্গিদের উদ্দেশ্যে করা ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘তোমরা শুধুই ইমতিয়াজকে মারলে কেন? ইমতিয়াজকে মেরে তোমরা ওঁর মায়ের আদরের ছেলেকে কেড়ে নিয়েছ। কেড়ে নিয়েছ ওঁর বাবার অনুগত সন্তানকে। ওঁদের বৃদ্ধ বয়সের একমাত্র ভরসা তো ছিল ইমতিয়াজই। ওঁর ভাই ও বোনের একমাত্র ভরসা ছিলেন ইমতিয়াজই। কেন মারলে ওঁকে? যে মহিলাকে উনি বিয়ে করে সারাটা জীবন কাটাবেন বলে কথা দিয়েছিলেন, তোমরা সেই মহিলার স্বপ্নটাকে নষ্ট করে দিয়েছ। ওঁকেই মারলে যখন, তখন কেন ওঁর মাকে মারলে না? ওর বাবা, ভাই ও বোনকে মারলে না কেন? মারলে না কেন সেই মহিলাকে, যাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন ইমতিয়াজ। যাঁর সঙ্গে সারাটা জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন। দয়া করে তোমরা এস। আমাদের সবাইকে খুন করে যাও। ওঁকে (ইমতিয়াজ) ছাড়া যে আমাদের বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই একটুও।’’
সাঁতেবাগের বাসিন্দা ইমতিয়াজ সিআইডি অফিসারদের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে তাঁর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে আসছিলেন রবিবার। একা একা যাওয়ার আগে ইমতিয়াজকে বার বার সতর্ক করেছিলেন সিআইডি কর্তারা। সিআইডি-র এক অফিসার জানিয়েছেন, ইমতিয়াজ তাঁদের বলেছিলেন জঙ্গিদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য তিনি দাড়ি কামিয়ে ফেলেছেন। মুখটাও অন্য রকম করে নিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও জঙ্গিদের ধোঁকা দিতে পারেননি ইমতিয়াজ। রবিবার সন্ধ্যায় রাশমি নাল্লায় ইমতিয়াজের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন- ইস্তফা দিচ্ছেন গভর্নর উর্জিত? কেন্দ্র-আরবিআই সংঘাতে জল্পনা তুঙ্গে
আরও পড়ুন- এ বার রাফালের দামের নথিও জমা দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট, আরও চাপে মোদী সরকার
পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘তোমরা (জঙ্গি) যাঁকে (ইমতিয়াজ) খুন করেছ, তিন কাশ্মীরকে ভালবাসতেন। তিনি কাশ্মীরকে সুখী দেখতে চেয়েছিলেন, তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসছিলেন। তোমরা এক জন অত্যন্ত ধার্মিককেও খুন করেছ। যিনি রমজানের মাসে এক দিনও রোজা না করে থাকতেন না।’’