বন্যায় ৯ রাজ্যে মৃত ৯৭, ধীরে জল নামছে মহারাষ্ট্রে

বন্যার জেরে কর্নাটকে অন্তত ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে দাবি রাজ্যের। এই বন্যাকে গত ৪৫ বছরে রাজ্যের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৯
Share:

মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি ও কোলাপুরের বন্যাবিধ্বস্ত এলাকায় চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।

দেশের এক অংশের মানুষ যখন বৃষ্টির আশায় চাতকের মতো বসে, তখন বন্যায় হাবুডুবু খাচ্ছেন ৯টি রাজ্যের বাসিন্দারা। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্র, কেরল, কর্নাটক, গুজরাতে। মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর একাংশও বন্যার কবলে। ডুবেছে অসম ও বিহারের বিস্তীর্ণ অংশ। একটানা বৃষ্টিতে ওড়িশা ও গোয়ার অবস্থাও মোটেই সুবিধাজনক নয়। দক্ষিণ-পশ্চিমের রাজ্যগুলিতে শনিবার ফের ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বিপদের আশঙ্কা বাড়ছে। বৃষ্টি-বন্যা-ধসে এখনও পর্যন্ত সারা দেশে ৯৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।

Advertisement

বন্যার জেরে কর্নাটকে অন্তত ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে দাবি রাজ্যের। এই বন্যাকে গত ৪৫ বছরে রাজ্যের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। তিনি কেন্দ্রের কাছে তিন হাজার কোটি টাকা সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ বেলগামে গিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের ১৬টি জেলা জলমগ্ন। বন্যা কবলিত প্রতিটি জেলাকে ত্রাণ বাবদ ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বন্যায় কর্নাটকে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবার-পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি। এখনও জলে আটকে বহু মানুষ। শনিবার নীলগিরি থেকে দুই শিশু-সহ ১১ জনকে উদ্ধার
করেছে বায়ুসেনা।

কেরলের ন’টি জেলায় আগেই লাল সতর্কতা জারি করেছিল প্রশাসন। শনিবারও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা-পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। তবে কোচি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রবিবার দুপুর বারোটা থেকেই উড়ান চালু হবে। রাজ্য জুড়ে ১ লক্ষ ২৫ হাজার বন্যার্তকে উদ্ধার করেছে পিনারাই বিজয়ন সরকার। তাঁদের ৭৩৮টি ত্রাণ শিবিরের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।

Advertisement

ভারী বৃষ্টি মাথায় নিয়ে চার দিনের ছুটিতে বেঙ্গালুরু থেকে সপরিবার মুন্নার বেড়াতে গিয়েছিলেন প্রবাসী বাঙালি সোনম দত্ত। কিন্তু বর্ষার ভয়ঙ্কর রূপ দেখে ছুটি ফুরোনোর আগেই ফিরে এসেছেন তাঁরা। পেশায় স্কুল শিক্ষিকা সোনম জানিয়েছেন, ‘‘মুন্নার আসার পথে ইদুক্কি বাঁধের টইটম্বুর চেহারা দেখেছি। বৃষ্টিতে ওই বাঁধ ভাঙলে কী হবে, ভাবতেই ভয় লাগছে। মুন্নার ঘুরে দেখার কথা ভাবিনি আর। রাস্তা খোলা থাকতে থাকতে আজ, শনিবার বেরিয়ে এসেছি।’’ শুক্রবার পর্যন্ত গুজরাতে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আজ নতুন করে বানভাসি হয়েছে কচ্ছ জেলার একাংশ।

তবে আশার কথা, শনিবার থেকে ধীরে জলস্তর নামতে শুরু করেছে মহারাষ্ট্রের কোলাপুর ও সাঙ্গলিতে। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্য জুড়ে ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পীড়িতদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই অভিযোগকেই হাতিয়ার করতে চাইছে কংগ্রেস, এনসিপি-সহ বিরোধী দলগুলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement