ইস্তফার চিঠি সীতার, ঠেকালেন বিমান-সূর্য

রাজ্যসভার ভোটের জন্য কংগ্রেসের সমর্থন নেওয়া হবে কি না, এই প্রশ্নে এ বার দীর্ঘ লড়াই হয়েছে সিপিএমের অন্দরে। আলিমুদ্দিনের দাবিতে ভরসা পেয়ে লড়ে যাচ্ছিলেন ইয়েচুরি। যদিও পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতে সংখ্যার জোর তাঁর ছিল না।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৭
Share:

সংসদে: সীতারাম ইয়েচুরি। বৃহস্পতিবার। পিটিআই

কেন্দ্রীয় কমিটির ভোটে সবে খারিজ হয়ে গিয়েছে তাঁর রাজ্যসভায় প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব। ক্ষোভে-হতাশায় পদত্যাগের চিঠি লিখে ফেলেছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক! যাঁর মত দল মানে না, তাঁর আর পদে থাকার মানে কী?

Advertisement

এ কে গোপালন ভবনে রাত পর্যন্ত পড়ে থেকে শেষমেশ সীতারাম ইয়েচুরিকে নিরস্ত করেছেন বাংলার দুই নেতা বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁরা বুঝিয়েছেন, হায়দরাবাদে পার্টি কংগ্রেসের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গিয়েছে। সামনে বিরাট লড়াই। এই অবস্থায় পদ ছেড়ে দিলে বিপদ হবে, বাংলাতেও দলটা আরও বিপাকে পড়বে। রুদ্ধদ্বার আলোচনার পরে ইয়েচুরি আর তাঁর পদত্যাগপত্র পলিটব্যুরোয় পেশ করেননি। কিন্তু সিপিএমের শীর্ষ স্তরে বিভাজন সমুদ্রের মতো চওড়া হয়ে গিয়েছে!

রাজ্যসভার ভোটের জন্য কংগ্রেসের সমর্থন নেওয়া হবে কি না, এই প্রশ্নে এ বার দীর্ঘ লড়াই হয়েছে সিপিএমের অন্দরে। আলিমুদ্দিনের দাবিতে ভরসা পেয়ে লড়ে যাচ্ছিলেন ইয়েচুরি। যদিও পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতে সংখ্যার জোর তাঁর ছিল না। কেন্দ্রীয় কমিটির ভোটে চূড়ান্ত ভাবে আলিমুদ্দিনের মত খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে পলিটব্যুরোর বাঘা নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, যে সাধারণ সম্পাদকের লাইন হেরে যায়, তাঁর আর পদে থাকার নৈতিকতা কোথায়? তাঁরা টেনে এনেছেন অতীতে রাজনৈতিক লাইন পরাস্ত হওয়ার পরে পি সুন্দরাইয়ার সরে দাঁড়ানোর দৃষ্টান্ত। এ সব শুনেই পদের টান কাটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন ইয়েচুরি।

Advertisement

আরও পড়ুন: ডিএনএ ভুলে এনডিএ-তে

সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠ এক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের কথায়, ‘‘আমাদের পার্টিতে সীতারামকে সবাই হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের যোগ্য উত্তরসূরি বলে। প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে জ্যোতি বসু-সুরজিৎদের মত দলে পরাস্ত হওয়ার পরে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সুরজিৎ কিন্তু ইস্তফা দেননি। সুরজিতের চ্যালা গুরুর পথেই চলছে বলে কটাক্ষ শুরু হয়েছে দলে!’’ এই বিদ্রুপ মানতে পারেননি ইয়েচুরি। যদিও বিমানবাবুরা বুঝিয়েছেন, মাথা ঠান্ডা রেখে এই লড়াইয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে এখন। এমনিতেই জাতীয় রাজনীতিতে দলটা কোণঠাসা। এর পরে কাণ্ডারী হাল ছেড়ে দিলে তাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়বে।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বিমানবাবুরা এ কে জি ভবনে ইয়েচুরিকে বোঝাতে ব্যস্ত ছিলেন তাঁদের স্বার্থে। অন্য দিকে আবার কেরল হাউসে দক্ষিণী ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক সেরেছেন বৃন্দা কারাট। দলের একাংশ বলছে, আগামী পার্টি কংগ্রেসে মহিলা সাধারণ সম্পাদক চেয়ে ইয়েচুরির মাথা কাটতে নামতে পারে কেরল শিবির! বিপদ কালে গৃহযুদ্ধ তুঙ্গে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement